প্রিয় কণা,
পৃথিবীর সৌন্দর্য্য অনুভুতির সমস্ত দ্বার
উম্নোচন করে আমার হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা থেকে কুড়িয়ে
এনে তোমাকে জানায় একরাশ প্রীতি ও রক্তিম শুভেচ্ছা ।


কণা মানুষের জীবন অনেকটা প্রবাহমান নদীর মত
সে সর্বদাই ছুটে চলে কখনো থেমে থাকে না ।
এই  প্রবাহমান জীবনে মানুষ অনেক সুখ দুঃখ অনুভব করে।
মানুষ জীবনে দেখে অনেক রঙ্গিন স্বপ্ন যেমন আমি দেখে ছিলাম
তোমাকে নিয়ে। যখন এ রঙ্গিন স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নেয়,
তখন মানুষ খুব আনন্দ অনুভব করে।
আর যখন স্বপ্ন-স্বপ্ন হয়েই রয়ে যায়,
তখন তার মনের অনেক অজানা স্মৃতি এসে নাড়া দিয়ে যায়।


কণা চলার পথে অনেকের সাথে পরিচিত হতে হয়।
এই পরিচিত জনের অনেককেই সে আপন করে নেয়।
কিন্তু সবার মুখ বা নাম সব সময় স্মৃতিতে ধারণ করা সম্ভব হয় না।
যাকে মন প্রান উজাড় করে ভালোবাসা যায়
তার ছবিই মনের দুয়ারে বার বার উঁকি মারে।
কণা আমি যাকে ভালোবাসা নামক শব্দটি আমার অন্তরে শক্ত আসন করে বসলাম।
তাকে নিয়েই সাজিয়ে ছিলাম আমার জীবনের প্রতিটি ক্ষন,
আর আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে যে নামটি
বা যার ছবিটা আমার হৃদয় আকাশে উজ্জ্বল তারা হয়ে ছিলো
সে হচ্ছে তুমি।
আমি মন প্রান উজাড় করে তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম ।
কিন্তু আমার ভালোবাসার মুল্য তুমি কত টুকু দিলে ?


কণা অতীতের কথা স্মরণ করে দিয়ে তোমার কষ্ট
পুনরায় জাগিয়ে দেয়ার ইচ্ছা আমার নেই ।
তবুও আমি  আমার জীবনে ঘটে যাওয়া চরম বাস্তবকে অ-স্বীকার করতে পারি না।
জীবনের প্রথম বেলায় আমার প্রেমের ভুবনে তোমাকে প্রেরন করে ছিলাম
জীবন্ত ভালোবাসার উষ্ণ আবেদন।
নিয়তির কি পরিহাস।
ক্লান্ত রবি যখন ধরনীর বুক তপ্ত করে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছে,
তখন তুমি পিছু ডাকছো।
এখন আর সময় নেই। কণা আজ আমি  নিঃস্ব তোমাকে দেবার কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই আমার।
কণা আমি আমার সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে তোমার ঘুমন্ত মনটাকে জাগাতে চেয়ে ছিলাম।
কিন্তু তুমি আমার সেই ডাককে একটা পাগলের প্রলাপ বলে উপেক্ষা করে
তোমার ঠোঁটে ফুটে উঠে ছিলো কৌতুহলের হাসি।
কণা আমার মনের মধ্যে একটা সুন্দর সিংহাসন ছিলো
সেখানে আমি তোমাকে বসিয়ে কত নানান রঙ্গের স্বপ্ন দেখতাম।
তোমাকে আমি লাল বেনারসী শাড়ি পরিয়ে হাতে লাল মেহদী দিয়ে
আমার মনের সিংহাসনে আপন মনে তোমাকে সাজাতাম


কিন্তু হঠাৎ আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো।
স্বপ্ন আজ শুধু স্বপ্ন হয়ে রয়ে গেলো।
কণা আমার জীবন আকাশের সূর্য্যের আলোটা যখন নিভে যাচ্ছে
তখন তুমি আমার জীবনে আসছো।
কণা  এলেই যদি, কেন শেষ বেলাতে ?
কণা আমার জীবন আকাশের সূর্য্যটা এখন আর প্রচন্ড কিরণ দিতে পারবে না।
আমি তোমাকে ভালো বাসতাম এখনো বাসি কিন্তু
আজ আমি তোমাকে গ্রহন করতে পারছি না।


কণা আমি জানি আজ আমার এই চিঠিটা পড়ে
তোমার মনের কোন এক কোনে আমার ছবিটা ভেসে উঠবে।
কণা আমি তোমাকে যতটুকু ভালোবেসে ছিলাম।
আমি জানিনা তোমাকে আমার জীবনের চাইতে
আর কেউ এত বেশি ভালোবাসতে পারবে কিনা।
কণা আজ আমার অনেক কিছু তোমাকে বলতে ইচ্ছে করছে
কিন্তু  আমার বলার সে অধিকার আজ আর নেই বিধাতা কেড়ে নিলো।
কণা তুমি কেন সে দিন আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে ছিলে ?
আজ আবার কেন তোমার জীবনে আমার মত হতভাগাকে স্থান দিয়ে
তোমার জীবনটা কে নষ্ট করতে চেয়েছিলে
নাকি আমার সাথে ক্ষনিকের জন্য অভিনয় করে
পৃথিবীর সমস্ত নারী জাতিকে কলংকিত করতে চেয়েছিলে ?
কণা সব সুখ মিলনে হয় না।
কিছু সুখ বিরহেতে পাওয়া যায় আবার সব ফুল কখনো ফোটে না
কিছু ফুল কোঁড়িতেই ঝরে যায়।
আমার জীবনটা ও অকালে ঝরে যাওয়া কোঁড়ির মত ঝরে গেলো।
তোমার আমার মিলন আর হলো না।
কণা তুমি যদি আমাকে সত্যিই ভালোবাসো তাহলে আমাকে ভুলে যেও।
জীবনটা কে আবার নতুন করে গড়ে তোল।
কণা আমার জীবনের শেষ লগ্নে তোমাকে দোয়া করি তুমি যেন সুখি হও।
তুমি যখন আমার এই চিঠিটা পড়বে তখন আমি অনেক অনেক দুরে
যেখান থেকে মানুষ আর কখনও ফিরে আসেনা ।
সুন্দর মানুষ সকল প্রেরনার উৎস
তাই তোমাকে বলছি নির্জন ছেড়ে লোকালয়ের মধ্যে চলে এসো
জীবনটা বুঝতে শিখো ।


কণা এটাই আমার জীবনের শেষ চিঠি।
তোমাকে আমি আর কখনও বিরক্ত করবো না।
আমি আর তোমার কলেজের সামনে গিয়ে দাঁড়াবো না
আর বেশি কিছু লিখে তোমাকে বিরক্ত করছিনা।
কণা আমার জীবনের শেষ বেলাতে তোমার কাছে
আমি হাত জোড় করে ক্ষমা চাচ্ছি পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও ।
আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি তাই তুমি আমাকে ক্ষমা করতে পারবে কিনা জানি না।
কণা তুমি যদি আমাকে ক্ষমা করতে না পারো তবে যেন অভিশাপ দিও না ।
পরিশেষে আমার জীবনের সকল সুখ তোমার নামে উৎসর্গ করে তোমার সুখ কামনা করে শেষ করছি।


খোদা হাফে
ইতি
শিশির