চারিদিকে চলছে হৈ-হুল্লোড় কুচকাওয়াজ,
শুধু আমি একাই শুনতে পাই
নিরবতার আওয়াজ।
তুমি ছাড়া আমার পৃথিবী নিরব,
মাগো তোমারই অভাব
আজ খুব হয় অনুভব।।


বিষাদ করলে সুচনা,
মনবীনে চলছে রচনা
নেই কোন উপসংহার।
আমি কে তাহা তুমি
ভালো করেই জানতে,
তুমি না থাকিলে আটাশ বছর
আগেই হতাম পরবাসী,
মাগো তোমায় খুব ভালোবাসি।।


তুমি ছিলে পরিবারের
সবচেয়ে মূল্যবান
সবারই প্রিয়জন,
কেন তুমি চলে গেলে
কিবা ছিলো অভিমান,
নাকি করতে পারিনি
তোমায় সঠিক মূল্যায়ন।।


মনটা মোর বড়ই অভাগী
মানুষের মাঝে খুঁজি
তোমারই প্রতিচ্ছবি।
খুঁজেও পাই ক্ষানিক ঠাঁই
তবে মায়ের স্বাদ নাহি পাই।।


বাবা নামক ছাতা বিরাজমান সারাবেলা
তবুও যেন বৃষ্টিতে ভিজি বেলা অবেলা,
তবুও যেন আমি একেলা।।
আদরের চাদরে জড়িয়ে রাখছে,
তবুও যেন মনটা কনকনে শীতে কাঁপছে।
এ মন সারাক্ষণ করে ক্রান্দন,
ফেঁটে চৌচির কত বন্ধন।।


মনের বে-খেয়ালে হঠাৎ মা বলে,
কতবার হয় ডাকা,
ঘর থেকে আসেনা ভেসে
ডাকছো কেন খোকা।।


তুমি ভালো করেই জানতে
কে তোমায় কতটুকু নিয়েছিল যত্ন,
এখন সবাই বোঝে তুমি ছিলে
ধরনীর মূল্যবান রত্ন।।


এখনও জমে আছে ভাই বোনের তর্ক
তবে নেই নালিশ,
আজ নেই বিচারক
কে বা করবে সালিশ।।


দুই হাজার তের সন
তোমার ছেলের চাকরি হয়েছে,
সবাই খুশি কতজনে কত বায়না ধরেছে।
শুধু একমাত্র তুমি ধরনি কোন বায়না
করেছো শুধু কান্না,
তোমার ছেলে দূরে থাকবে বলে।।


ছুটি শেষ দুপুর দেড়টা ফিরলুম কর্মস্থলে,
আবার কবে ছুটি হবে মুঠো ফোনে বলতে বিকালে।
মাগো আজ আমি ঠিকই বাড়ি ফিরি
শুধু তুমি নেই
কার সাথে দিয়ে আড়ি
নিলে তুমি চিরছুটি।।


বাড়ি ফিরলে আমার প্রিয় খাবার
এখনো তৈরি হয় বার বার,
আমি খেয়েও যেন অনাহারী।
মাগো তোমার মত আর কেউ
রাখেনা আমার খেয়াল,
মনের আর্তনাদ শুনে না কেউ
সবাই যে বে-খেয়াল।
শুনবে কি করে
তুমি তো মাটির দেয়ালের ওপারে।।


এখন বাবার ফোনে ঘুম ভাঙ্গে
খবর নেয় রোজ,
মা আমার অভিমানী নেয় না
কোন খোঁজ।।