নিষিদ্ধ জিনিসই মানুষ চায় বারবার,
ঠিক যেমন—তুমি।
তুমি আমার জন্য নিষিদ্ধ,
তবুও কেন বারবার তোমায় চাই আমি?
কেন বারবার তোমার কাছে ফিরে গিয়ে
নিজেকে জড়িয়ে নেই মৃত্যুতূল্য আধোপ্রেমে?
নফসকে বোঝাই, কিন্তু তোমায় বুঝতে পারি না,
বারবার তুমি ফিরে আসো অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে,
তাই তো দূরে থাকি!
কিন্তু যতদূরে যাই, মনে হয় কেবল তোমারই কাছে আসি,
এই বন্ধন কি কখনো ছিঁড়বে না?
আমি তো ভেবেছিলাম—
তোমার নরম আঙুলের ছোঁয়া ভুলে যাবো,
তোমার হাসির শব্দ মিলিয়ে যাবে বাতাসে,
তোমার ছায়া কুয়াশায় ঢেকে দেবে অচেনা সকাল।
কিন্তু না!
তুমি ফিরে আসো—
অন্ধকার রাতে,
ঝুম বৃষ্টির শব্দে,
ভাঙা সেতুর মতো একাকী দাঁড়িয়ে থাকা বিকেলে।
তোমার চোখের সেই তৃষ্ণা
আমাকে রক্তাক্ত করে,
তোমার নীরবতা—
এক অভিশপ্ত গানের মতো কানে বাজে!
তোমার হাত থেকে ছুটতে গিয়ে
আমি আবার তোমার হাতেই বন্দি হই।
আমি কি তবে তোমারই জন্য?
আমি কি তবে এ শহরের বিষণ্ন পাখি,
যার ডানা ভাঙা, যার ঠিকানা নেই?
তুমি কি তবে সেই দিগন্ত,
যেখানে আলো আছে, কিন্তু পৌঁছানো নিষিদ্ধ?
আমি চাই না ফিরে যেতে,
আমি চাই না এই বিষাক্ত মোহ,
আমি চাই না হৃদয়ের এই ক্ষত,
তবু কেন জানি বারবার তোমারই কাছে ফিরে আসি!
এই বন্ধন কি কখনো ছিঁড়বে না?
আমার বুকের ভেতর পুড়ে মরে
একটা অভিমানী সূর্যাস্ত,
আমার নিঃশ্বাসের ভেতর জমে থাকে
তোমার ফেলে যাওয়া শূন্যতা।
তবু কেন আমার ছায়া
তোমার ছায়ার সাথে মিশে যায়?
এই শহরের সমস্ত আলো
কেন আজও তোমার নামে জ্বলে?
এই গলির ধুলো-বালি
কেন তোমার পায়ের চিহ্ন খোঁজে?
এই বাতাসের স্পর্শে
কেন আজও তোমার উষ্ণতা থাকে?
আমি তো ভেবেছিলাম—
তোমাকে ভুলে যাবো,
তোমার নামে আর কবিতা লিখবো না,
তোমার জন্য আর রাত জাগবো না।
কিন্তু রাতের নক্ষত্ররা
আজও তোমার গল্প শোনায়,
বাতাসের ফিসফাসে
আজও তোমার নাম বাজে।
তুমি কি জানো?
আমি এক বিষণ্ন নাবিক,
তোমার চোখের সমুদ্রে ডুবে গেছি,
আমি এক দিকহারা যাত্রী,
তোমার পথে পথ হারিয়েছি।
আমি এক ব্যর্থ কবি,
যার সমস্ত শব্দের মানে তুমি!
তবু আমি জানি,
তুমি আসবে না,
তুমি ফিরবে না,
তুমি থাকবে না।
তুমি আমার জন্য নিষিদ্ধ দিগন্ত,
যেখানে আলো আছে,
কিন্তু পৌঁছানো বারণ!
তুমি আমার জন্য এক অভিশপ্ত স্বপ্ন,
যা দেখলেও ছুঁতে পারি না!
তুমি একটা অসমাপ্ত চিঠি,
যার শেষ লাইন আমি লিখতে পারিনি।
তুমি একটা বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যা,
যেখানে আমি ছাতা ছাড়া একা দাঁড়িয়ে আছি।
তুমি একটা সুর—
যা শুনলেও হৃদয়ে বাজে না!
তুমি কি জানো?
তোমার জন্য আমি এক রোজনামচা লিখেছি,
যার প্রতিটি পাতায় শুধুই তোমার গল্প!
তবু সেই গল্পের কোনো পরিণতি নেই,
সেই গল্পের কোনো ইতি নেই।
তুমি কি জানো?
আমি তোমাকে চেয়েছিলাম
একটা গভীর রাতের প্রার্থনার মতো,
একটা না বলা কষ্টের কান্নার মতো!
তবু কেন আমি বারবার তোমায় চাই?
তবু কেন আমি বারবার তোমার কাছেই ফিরে আসি?
এই বন্ধন কি কখনো ছিঁড়বে না?
নাকি এটাই আমার নিয়তি—
একটা অসমাপ্ত প্রেমের কবিতা হয়ে বেঁচে থাকা?