জন্মের শুভ্রতা আর মৃত্যুর বীভৎসতায় যদি আমি,
অন্তিম চাওয়া সমগ্র একত্রকরণে প্রেমিক হয়ে— তোমাকে চাইতাম।
তবে এই ধরার বিবিধ সহস্র প্রেমিকের মতো,
ফুরিয়ে যেতাম সাময়িক মোহের পরতে পরতে।


আজ আত্মঘাতী কোন বোমারু নাবিক হয়ে— দুচোখ ভরা সিন্ধুতে,
অস্পর্শী সব কামনার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে— হতামনা ইতিহাসের নিকৃষ্ট অবুঝদার।


একক হতে নিযুতের পলকে দেখেছি অন্তহীন— তুমি তা জানো; তবু জানিনা আমি,
বিবর্তনের হাতধরে অনাবিল এক অদৃশ্য জ্যোতির আলোকরেখায়— হৃদয়ের পটভূমিতে অম্লান আজও যা।


দীঘল প্রতীক্ষমান সেই গ্রহপুঞ্জীরাও— হারিয়েছে কক্ষপথ আপন,
কী অদ্ভুত পরিহাসের ছলনায় ভুলেনি পলক— সেই দৃষ্টির থাবা।


অতঃপর চিত্তের অনন্ত পসরার মাস্তুলে ভাঙ্গা কাঁচের চুড়ি— হৃদয়ের লকেট,
আকাশ পাঠিয়েছে যতনে পরম তোমার নামে— তা আমি জানি; তবু জানোনা তুমি।


আকাশ পাখনা খুলে বর্ষণ হয় ঝরা পালক— বিস্মৃতির আঁধার অশ্রুপুঞ্জী,
নিঝুম এই সিন্ধুতটে এক অবিশ্রান্ত নাবিকের— অস্পর্শী বুকের ঘাটে।


দেখেনি কেউ তাই খুঁজেনিও কেউ— দেখেনি তবু খুঁজেছে একজনা; সেজনা তুমি,
রাত্রির নিস্তব্ধ প্রহরায় জাগ্রত সদা ব্যথামালা— জানে সে কথা; আছে আঁকা শিয়রে তার।


এই খেয়া চলে যায় আদিগন্ত উত্তর চিড়ে— জর্জরিত কান্নার তপোবনে; নীরব যাপানের পাড়ে,
সাক্ষী যার লেপ্টানো হেমন্তের শিশির ফোঁটা— কেয়া ফুল; মুখরিত গুঞ্জনে মৌমাছির দল।


আজ ক্ষণে ক্ষণে বেজে চলা আর্তনাদের হাহাকার— শোনেনি কেউ; বিরহের বর্ণীল সুর,
আজ মনে হয় ধরণীর সব শ্রবণ চালিকায় নেমেছে ধ্বস— জ্বলেনি রবি; উঠেনি চন্দ্রমল্লিকার নীল।


তবুও ছোঁয়ার এই আরাধনা থেমে নেই— চেয়ে রয় নিত্য; নিশীথের দূর কুহেলিকায়,
আসবে প্রত্যাশার ফোয়ারা জৌলুসতায় রাঙিয়ে— ভরাবে হৃদয়ো-চিত্ত কামনার নীহারিকা সমেত।


নির্বাক রজনী মৃদু স্বরে ফুরায়— একাকীত্ব পান করে অমৃত সুধা; অনন্ত জিইবার তরে,
আসমান ফেটে পড়ে মন্থর সুবহে সাদিকের বাহুডোরে— পৌছেছে তরী নিভৃত ওই পাড়ে।


রচনাকাল-
2015.Aug.05_02.20 রজনী।
খরুলিয়া, কক্ִসবাজার।