এই শহরে গাঁয়ের মত দুপুর নামেনা,
----যেমন হয়না সকাল কিংবা রাত্রি!
শহরের কক্ষগুলোতে শুধু রঙ আর তারপিনের গন্ধ,
নাগরিকেরা মাথায় শ্যাম্প্যুর ঘ্রাণে কবিতা খোঁজে,
এখানেই জবাকুসুম তেলের প্রয়োজন হয়না আর,
শহরের আকাশে মৃদঙ্গ তালে নাচেনা আকাশগঙ্গা,
এখানে আকাশে আজ, বেহুলার সংসার;


সুতানটি, হরিকল, পুণ্ড্র এ সব হয়ে গেছে প্রাগৈতিহাসিক নামাবলী; পুঁথির পাতা, বুকের কাছে হলদে রঙ নিয়ে কোন পাখী উড়ে যায়না,
ঠোঁটের ফাঁদে ছটফটায় না ঘাসফড়িঙের সদ্য বিবাহিতা নবোঢ়া;
এ শহর শশ্মানে কালি মাতা, নরমুণ্ডের ব্যাবসায়ী,
এখানে হাড়ের দামে সবজি বিক্রি হয়, হয় ব্যাবচ্ছদিত,
ক্যালসিয়ামের সরবত;


এখানে খালে ঝাপ দেয়না কিশোর,শোল মাছের ঝোল,
আর বাটা মশলায় থাবা বসিয়েছে বনিক,
মজুরেরা ফুটপাতে বসে আধবোজা চোখে রোমন্থন করে,  
----ফুলতোলা টিনের থালা, আর চাপকলের ঠান্ডা পানি,
এখানে রাত্রি নামেনা ঝপ করে,
জ্বোনাকী পোকা চিনিয়ে দেবার ক্ষমতা হারিয়েছে পিতারা,
ছোট্ট শিশুর হাতে এখন আধুনিক আলোকিত বই,
ছোঁয়ায় যার, পাত উলটে যায়;


এ শহরে বুকের ভেতরে পাথর, শুধু সিমেন্টের সুবাস,
সাদা চুনকামে প্রেমিকারা বেহুঁশ হয়েছে এখানে,
এখানে কবিরা যায় ঝলমলে শুঁড়িখানায়, কবিরা হয়ে যায়--
------কাক আর কোকিলের যুদ্ধ রেফারী,
শহর একটা আধমরা বুড়ো মাতাল, একটা উদাসী পাগল,
যে পেচ্ছাব করে যায় রাজপথে, ট্রাফিকের ঘামের স্রোতে,
চকচকে আধুলি হাসি হাসে এ শহর,
-------এ শহর একটা মরা রেলগাড়ি,
একটা বিষন্ন বুড়িয়ে যাওয়া বিগত যৌবনা নারী;


আমি এ শহরেই বেঁচে আছি, আমি এ শহরেই মরে যাবো;
আমি এ শহরেই একদা শুষ্ক শীতের পাতা,
----------------আর একটা ন্যাড়া শাল গাছে;