তুমি গেলে সন্ধ্যার ছায়ায়,
আমি রইলাম নিঃসঙ্গ ছায়াপথে-
ঝরা পাতার মত বুকের ভিতর,
ধ্বনিত হল শুধু একটাই নাম, "তুমি"!

মহুয়ার গন্ধে মিশে ছিল তোমার স্পর্শের নরমতা,
তোমার চোখের পলকে ছিল একটা বসন্ত,
হয়তো শুধু আমার জন্য রাখা!

কিন্তু সময় বড়ো নিষ্ঠুর, একদিন হঠাৎ হারিয়ে গেলে-
সেই মহুয়ার বনের দিগন্তে।
আমি খুঁজেছি, খুঁজেছি প্রতিটি পাতায়,
প্রতিটি ভোরের শিশিরে।

রাতগুলো নিঃশব্দে কাঁদত,
আমার মতোই একা, একেবারে একা।
আমার হাতে ছিল শুধু তোমার লেখা চিঠি,
আর কিছু অপূর্ণ কল্পনা।

তোমার চলে যাওয়াটা ছিল না কোনো বিদায়!
ছিল এক নীরব বিদ্রোহ,
যেন বসন্ত কুড়িয়ে নিল তার ফুলগুলো,
আর আমার জন্য ফেলে গেল-
শুধু শুকনো ডাল, অশ্রুজল আর নীরবতার ভার।

আমি প্রতিরাতে মহুয়ার গন্ধে ডুবে
তোমার ছায়াকে জড়িয়েছি নিঃশব্দে,
হয়তো তুমি টের পাওনি-
তোমার নাম নিয়েই ভিজেছি বৃষ্টিতে,
তোমার মুখ ভেবেই জ্বলেছে দীপাবলি,
বেদনার সুরে আমার একাকী ঘরে।

বিরহ ছিল শুধু দূরত্বে নয়,
ছিল হাজারটা "যদি", "তুমি", আর "হয়তো"!
তোমার গলায় শোভিত আভরণের মতো-
আমার বুকেও বেঁধেছিলাম তোমার প্রতিশ্রুতি!

আকাশ জানে, নদী জানে,
কতরাত আমি ভিজেছি তোমার অভাবের জোয়ারে,
তবু কখনো দুঃস্বপ্নে তোমাকে দোষ দেইনি,
কারণ আমি জানি, ভালোবাসা মানে অপেক্ষা,
আর অপেক্ষা মানেই বিশ্বাস!

এভাবেই একদিন যখন মহুয়ার বনে নতুন কুড়ি উঠল,
পাখিরা ডাকল ভোরের রাগে, তুমি ফিরে এলে ঘরে-
হাওয়ার মতো নরম, আলোয় ভেজা স্নিগ্ধ পরশ জুড়ে!
তুমি বললে- আমি আসবোই!
আমি বললাম- আমি অপেক্ষা করেছি!
তুমি প্রতিদিন আমার নামে ফুল ছুঁয়ে ছিলে!
আমি প্রতিরাতে তোমার অনুপস্থিতিকে ভালোবেসেছি।

মহুয়ার বনে সেই বিকেল-
আজও সময়কে ভুলিয়ে দেয়,
আমরা হারিয়ে যাই পত্র-পল্লবে,
তোমার ঠোঁটে জমা প্রতীক্ষার চুম্বনে-
যেখানে বিরহ মরে যায়,
আর প্রেম হয়ে ওঠে অমর।

সেই মুহূর্তে গাছেরা গাইল প্রেমের গান,
পাখিরা থেমে শুনল, আর আমরা হারিয়ে গেলাম
মহুয়ার বনে, বিরহের শেষে মিলনের নরম কাব্যে।

২১ এপ্রিল, ২০২৫