আমার মৃত্যুতে ঘটা করে শাঁখ বাজবে,
খই ছিটাবে প্রিয়জনেরা,
মসজিদে মুয়াজ্জিন আজান দিবে,
গোলাপ জলে শবের গন্ধ ঢাকবার কি বিষম চেষ্টা,
আতর, সুগন্ধী কাঠি জ্বালিয়ে রাখবে সারাক্ষণ,
পাখিরা শোকগীতি গাইবে,
ময়ূর পাখা মেলবে বাতাসে গা এলিয়ে,
প্রিয় বন্ধুরা চোখের কোণ ভিজিয়ে রাখবে,
প্রেমিকার হাহাকার দেখবে সবাই-
প্রেমের প্রথম ঠোঁট স্পর্শ করবার মুহূর্ত মনে পড়তেই
ডুকরে কেঁদে উঠবে মায়া,
শ্বশান প্রস্তুত করবে শবের বেদী,
কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়বে ক'জন তেজী যুবক,
আমার মা-বাবা-পরিবারের সবাই-
সাক্ষী থাকবে আমার মৃত্যুতে।


আসলে আমার মৃতদেহ তখন কষ্ট পাচ্ছে
ডাহুকীর ডাক শুনতে পাচ্ছে না সে,
চাতকের বৃষ্টির জলে স্নান করা দেখতে পাচ্ছে না সে,
প্রেমিকার ঠোঁট ছুতে পাচ্ছে না সে,
কি বৃষ্টি পড়ছে অথচ-
সে ভিজতে পারছে না;


ধর্মের ক্ষীণতায় কি অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেল?
ইশ! মৃত্যুরর খবরটা আগে পেলে-
চলমান উপন্যাসটি দ্রুত লিখে শেষ করে দিতাম,
কয়েকটি সিগারেট আরো খেতাম,
মদের শেষ গেলাসটি এক চুমুকেই ফাকা করে দিতাম,
একটা গান লিখেছিলাম- সেখানে সুর দিয়ে দিতাম,
থিয়েটারে আমার পার্ট'টা সুবীর'কে দিতাম,
সিনেমাটা শেষ করে রাখতাম-
এখন বাকি অংশটুকু কে পরিচালনা করবে?
সত্যজিৎ দা পারবে?


আমার মৃত্যু হয়ে গেছে-
মৃদুলের নাস্তিকতা কি আমায় আবার জন্ম দিবে?
কিংবা ধর্মভীরু সৌভিক দাসগুপ্ত
কি আমার মোক্ষলাভ ঘটাবে?
মৃত্যু তুমি কেন এলে?
আমার শেষ ঘটাবার জন্যে নিশ্চই?