আমাকে চাপাতির নিচে ফেলতেই হবে তোমাকে, কেননা, আমি খুঁজেছি
অনন্ত অম্বর, যেখানে দুধ নহর থেকে আমার চিন্তা ছড়িয়ে যায়
এন্ড্রোমিডার দিকে, পৃথিবী ছেড়ে কেপলার বা আরো কোন দূর দিক।
আমাকে থামাতেই হবে তোমার, কারণ-আমার আঙুলের ফাঁকে
খেলা করে সাপুড়ের গোপন মন্ত্র, আমার করোটির ভিতরের তাকে
সাজানো লাখো লাখো নিউরণের সমুদ্র সন্তরণ করে এগিয়ে আসছে
অবাধ্য সাপ নিধনের কৌশল-জ্ঞান, অনন্ত সময়ের পরিক্রমণশীল ধী।
কিন্তু, আমার মৃত্যু দেহটাকে ফেলে দেবে তোমার মাটিতে, পারবে কি
মুছে দিতে কালের প্রশ্নের দশদিক? জেনো, আমি মৃত, কিন্তু অভিজিত।


আমাকে খুন করো তুমি নৃশংসভাবে, নিজেকে চেনাও দিগ্বিদিক
গ্যালিলিও গ্যালিলিকে তোমরা ছাড়োনি, ছাড়োনি সক্রেটিসকে,
হেমলক থাকে তোমাদের শিরায় শিরায়, ঢালতে পারো উপুড় করে,
পারবে কি থামিয়ে দিতে পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটসমূহের চলন,
জানাতে পারবে কি কিভাবে ক্যান্সার কোষ, নিভে দেয়
কোষের ভিতরের প্রাণপ্রদীপ, বলতে কি পারবে, আজ, আমাকে ছাড়া
কিভাবে থামাবে তুমি লিভার সিরোসিস!কি বিধান সারাতে এ জরা?
আমি তো অন্তঃক্ষরা। তোমার চাপাতির কোপ, বিচ্ছিন্ন করতে পারে
আমার আঙ্গুলগুলো, থেঁতলে দিতে পারে মস্তিস্ক আমার, যেখানে বাস করে
অন্ধকার বিদারক লক্ষ কোটি জ্যোতিস্ক, যেখানে জেগে থাকে
অনন্ত ভোর, রাত্রির ভয় যাকে, রাত্রি যাকে তাড়া করে ফেরে;
যেভাবে তোমার পূর্বপূরুষ গত নবম শতকে বা তারও আগে
জ্বালিয়েছিলো আলহামরা, স্পেনে, গত শতকের ৭১ এ চোখ উপড়েছিল,
হুদপিন্ড খুবলে নিয়েছিল-শিয়ালবাড়ী, কালাপানি, মুসলিমবাজার,
জল্লাদখানা, বাংলা কলেজ, গল্লামারী বা রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে;
যেভাবে এ শতকে ধব্ংস করে যাচ্ছে রাক্কা বা পালমীর সভ্যতাকে।
তোমার কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কী বা পাবার আছে!


আমাকে খুন করো তুমি নৃশংসভাবে, কারণ আমার রক্তবীজ থেকে
গজিয়ে উঠতে পারে লক্ষ জোনাক পোকা, রাতের অন্ধকার ছিঁড়ে।
জোনাকীর আলোয় কেটে যেতে পারে আঁধারের একচেটিয়াত্ব
মুমুর্ষূ চিন্তা চেতনা,মৃত জনগোষ্ঠী ফিরে পেতে পারে সম্বিত, অমানিশা থেকে।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশী সময়


১১ আগস্ট ২০১৫; মঙ্গলবার; ২৭ শ্রাবণ ১৪২২; ঢাকা।