আমার জীবনে তোমার ছায়া নেই আজ এক অণু,
সাজাই আবাস ভাসাই নৌকা উড়াই পরাগ রেণু,
যেটুকু প্রচ্ছায়া রয়ে গিয়েছিল করছিল নতজানু,
ঝেড়ে মুছে সাফ করেছি সুতরা পরিশুদ্ধ গৃহ তণু।


বহুবার আমি উন্মন হয়ে গিয়েছি তোমার পাশে,
ভুল করে যদি তোমার ছড়ানো সৌরভ ভেসে আসে।
ভেবেছি কখনো বিভ্রমে যদি তোমার চোখেতে চোখ
পড়ে যায়, আমি ভুলে যেতে পারি জমে থাকা যত শোক।


ফিরতে হয়েছে শূন্য দু’হাতে করতলে গ্লেসিয়ার,
উষ্ণ জলেতে নিয়েছি শাওয়ার নির্জন অভিসার।
একাকী প্রণতি পায়নি তখন একমুঠো কাদামাটি
শস্যহীন হয়ে রয়ে গেছি আমি ম্রিয়মান পরিপাটি।


অনাবাদী থাকা আদুল মাটিতে গজিয়েছে কাঁটা গাছ,
কেউ যদি সেই মৃত্তিকা পথে ছড়ায় সবুজ ঘাস
কর্ষণহীন তৃষিত মাটিতে বেড়ে ওঠে যদি চারা
বহুদিন পর মহীরূহ হয়ে ছেয়ে যাবে পথ হারা।


অবহেলে চষা সে মাটিতে আজ ফলেছে রৌদ্র তাপ
গেয়েছি, নেয়েছি, হল্লা করেছি, মৌসুমে ওঠা ভাপ
ক্লান্ত হয়েছি, শ্রান্ত হয়েছি, নিভেছি কুয়াশা মেখে
জেগে উঠে বুঝি বদলে গিয়েছি, দেখেছি নিজেকে চেখে।


রংতুলি নিয়ে ঘষেছি নিজেকে ধুলোজমা ক্যানভাসে,
ঘষে মুছে ফেলি রংচটা দিন নতুনের অভিলাষে,
রূপ-রস-রং জলছবি যত মুছে চলি দুই হাতে,
ফুটাতে চেয়েছি নতুন সূর্য্য আগামী সুপ্রভাতে।


সাধনের শেষে অক্লেশে এসে ফিরে পাই তৃণলতা
মাংশাসী থেকে নিরামিষ ভোজে জেগে ওঠে প্রবণতা;
তোমার নামাবলী ভুলে যেতে যেতে নতুন মন্ত্র জপি
আমার এ নতুন দীক্ষা দিবসে তোমাকে বলীতে সঁপি।


ফিরে যাও তুমি চিরতরে আর এসো না কখনো পাশে,
যে খানে নদীতে পাল তোলা নাও, সরোবরে রাজহাঁসে
জলকেলী করে, ফুলে ফুলে ওড়ে প্রজাপতি আর পাখি
চোখের থেকে কুয়াশা সরিয়ে নতুন আল্পনা আঁকি।


সরিয়ে ফেলেছি প্রভাব তোমার আমার জীবন থেকে;
তোমাকে দিয়েছি যেসব সময় নিভিয়ে দিয়েছি তাকে
এখন আমার নতুন ভূখন্ড অচেনা অচেনা লাগে,
সেখানে রেখেছি আভল নিজেকে অপরূপ এই রাগে।


কালো ছায়া আর ধুলো মাখা দিন, টানাপোড়েনের খেলা
সরিয়ে রেখেছি একপাশে, আমি দেখি নির্বান বেলা
জগতের বুকে যত প্রাণ আছে ও সৃষ্টি ছড়ানো আছে
শান্তি আসুক সবার জীবনে, সকল সৃষ্টির কাছে।


দু’হাতে শান্তির ধারাজল আর নিষ্কাম যত চাওয়া
সাজিয়ে রেখেছি বুকের ডালাতে বিলাতে পরম পাওয়া,
আমার এ ধন অনেক যত্নে সঞ্চয় তিলে তিলে
আমাকে এবার দাও পরিত্রাণ একেবারে যাও ভুলে।।


এস, এম, আরশাদ ইমাম//অবিনাশী সময়
০২ অক্টোবর ২০১৫; শুক্রবার; ১৭ আশ্বিন ১৪২২//ঢাকা।