এখন
তার চেহারাটা সৌম্য, মলিন, ধূসর ও বিবর্ণ
কৃত পাপের কোন চিহ্নও কারো চোখে পড়েনা,
অতোটা কালপ্রিট ও ক্রুরও লাগেনি কোনদিন,
যেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে লাঞ্ছিত হয়েছিল
ছাত্রদের হাতে সেদিনও তাকে ক্রুর মনে হয়নি
অতোটা, যদিও ছাত্ররা তার ভিতরের রূপ দেখেছিল
কী জানি কেমন করে, অনেক আগে থেকেই;
সেজন্যই হয়তো সহ্য করেনি প্রিয় পবিত্র অঙ্গনে
শেভ করা শ্বাপদের পদচারণা, কোনভাবেই।


তখন
সে ভাবেনি হয়তো এভাবেই একদিন পুরনো হিসেব
দিতে দিতে ভিটে মাটি বেচে চলে যেতে হবে
প্রিয় পৃথিবীর মায়া ছেড়ে, গর্হিত কাজ করার
পঁয়তাল্লিশ বছর পার হলেও, আশ্চর্য্য! তাই না!
আসলে এই বাংলাদেশকে দেখেই বিখ্যাত পরিব্রাজক
বলেছিলেন সত্যিই সেলুকাস! ঠিকই বলেছিলেন।
সে ভাবেনি এই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গারদে একদিন
তাকে ঢুকতে হবে, গলায় চড়াতে হবে ফাঁসীর রজ্জু।
আত্মীয়-পরিজন, আন্তঃরাষ্ট্রীয় পক্ষ পাশে দাঁড়িয়েও
করতে পারবে না তার পাপ স্খালন, বাঁচাতে পারবে না
তাকে দন্ড থেকে, প্রত্যক্ষে ঝুলবে অলৌকিক ঝালর
চলে যেতে হবে সকলকে অনিচ্ছুক বিদায় জানিয়ে।


আগামী
কয়েকটি দিন তার মৃত্যুর সঙ্গে জুডো খেলা, লুডু খেলা
আল্লাহ্র সমীপে যাবার পূর্ণ প্রস্তুতির বেলা, আয়োজন;
কী জবাব দেবেন আল্লাহ্’র কাছে-যখন তিঁনি
জিজ্ঞাসা করবেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়
পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবীসহ গণহত্যার কথা
কী জবাব দেবেন তিনি এই নুরানী চেহারা নিয়ে
কীভাবে দাঁড়াবেন স্রষ্টার কাছে!  জবাব কী কিছু আছে?
নেই কোন জবাব বা নিস্তার, কোন মাফ অথবা দৈব
মৃত্যুর সুশীতল ছায়া স্পর্শ করবে তাকে অচিরেই
যেমন করে শহীদ বুদ্ধিজীবিগণ পেয়েছিলেন অকালে।


শেষ নয়
এখানেই, আমরা কেমন করে ভুলে যাব পূর্ণিমার কথা,
বাধ্য হয়ে যার মা বলেছিল, ‘‘বাবারা, আমার মেয়েটা
অনেক ছোট, তোমরা একজন একজন করে আসো’’
এর দায়ভার তিনি কিভাবে এড়াবেন! এড়ানো যাবে?
আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করিনি, কিন্তু সৃষ্টিকর্তা কি
ভুলে যেতে পারেন তাঁর সৃষ্টকে, অথবা যে তাঁর সৃষ্টিকে
ধ্বংস করেছিল তাকে? সেটা কোনক্রমেই সম্ভব না।
মৃত্যুর পরও তার রেহাই নেই, আল্লাহ্’র নিকটে
তার জন্য অপেক্ষা করছে চরম শাস্তি, অপার গঞ্জনা।


১৬ মার্চ ২০১৬; বুধবার; ০৩ চৈত্র ১৪২২
স্ফুরিত সময়//অফিস//ঢাকা।