রূপকুমারী, আকাশ থেকে নেমে এসে মর্ত্যে অধিষ্ঠান
স্তাবকেরা স্তবক নিয়ে হাজির, রূপ মুগ্ধরা রূপাক্রান্ত
পৃথিবী তার আগমনে আলোকোজ্জ্বল, বাতাস দাপট ময়;
শুধু একজন কেউ এই রূপের হাটেও কুৎসিতের আনাগোনা টের পায়!
একজন কেউ আরাধনার পাশে ঘুরে ঘুরে বীভৎসতার আমেজ পায়!
সঙ্গোপনে এই রূপ চাতুরীর ভিতর দিয়ে দেখে ফেলে
জীবনের অার্তনাদ, খুঁজে পায় অসুন্দরের অভিধান।
তার এই নীরব সন্তরণ, এই নীরব কান্না ধীরলয়ে
সান্ধ্য শ্রাবণ ধারায় ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়ে ওঠে।


তার ভীরু অসহায় চোখ, পলকহীন দৃষ্টি, শ্রাবণের শেষ বিকেল
আকাশ থেকে ঝুর ঝুর করে, যেন, ভেঙ্গে পড়ছে
আলৌকিক কাচের প্রাসাদের রং-বেরং এর নকশা করা
কারুকার্যের ঐশ্বর্য্য; সে সান্ধ্য মগ্নতায় তার দিকে তাকিয়ে দেখে-ভাবে
কীভাবে পেরিয়ে গেল জীবনের এতোগুলো সন্ধ্যা, এতো আলো
এতো উজ্জ্বলতা আর কর্মব্যস্ততাময় প্রার্থিত দিনগুলো!
এখন সান্ধ্য আমেজে নিজস্ব মৌনতার ভিতরে ডুবুরী
খুঁজে চলে অলৌকিক মনিমুক্তোমালা, পান্না-জহরত
আসলে দৌড়ানোর কালে কোনদিন যেগুলোর প্রয়োজনই মনে করেনি;
আজ সেগুলোই কেন খুঁজছে মন? তবে কি ভিতর থেকে ডাকছে কেউ?


অনেক সম্ভবনাময় প্রকল্পের জন্ম দিয়ে মাঝপথে
থামিয়ে চলে এসেছে সমুদ্রতটে, বালিয়াড়ীতে
ভাবছে এ সাগর পাড়ি না দিলে কী ক্ষতি!
পরাজয়ের কোন গোপন ভয় কি ছেয়ে ফেলেছে আত্মকে?
নাকি নিজেকে নতুন করে আশা জাগাবার অনুবাদহীন প্রত্যয়!
সময় কিছু বলে না মুখ ফুটে, নিজস্ব ধী-শক্তি দিয়ে
বুঝে নিতে হয় সে ভাষা, সে অক্ষম ভাষ্যপাঠে।


সময় আরো গাঢ় হয়ে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে,
সামনে বিস্তৃত রাত; সায়াহ্নের এই হৃদয়জ ভাষা
আকাশ কি সে সব বুঝতে পারে?  
নিদারুণ অন্ধকার ঢেকে রাখে সব। শব।
রাতভর রূপকুমারী দাঁতের আলো ছড়িয়ে হাসে
এ হাসির কী রূপ সে-ই দেখতে পায়,
যার আরাধনার ফসল এই রূপকুমারী।
রূপকুমারী তাকেই দাহ করে, পুড়িয়ে করে ছাই
ছাই উড়িয়ে উল্লাস করে রাতভর, সে কী পীড়ন!!
দিনে জনারণ্যে হারায়, আরেক আরাধ্য সন্ধ্যার বিদায়ে।।


অভিজ্ঞান-৫
৩১ জুলাই ২০১৬/রবিবার/১৬ শ্রাবণ ১৪২৩/ঢাকা।