একটা স্বপ্ন
একটা জীবন
একটা মানুষ
আর নিস্তব্ধ চারপাশ,
একদিন
যার চোখে ছিল আশা, আনন্দ আর বিশ্বাস
একটা সরল অংকের মতো মন
ভাবছো তাকে নগরীর মানচিত্র থেকে দেবে বনবাস
কাঠের গুঁড়ির মতো করাতের শব্দ ভেঙে
কিনবে টাকার মানুষ আর না বলা কথার ক্রীতদাস,
হয়তো এটাই চরম সত্য, ইতিহাস কিংবা
কলার পাতায় ভেসে উঠা মানুষের কুসুমাস্তীর্ণ পরিহাস |
কিন্তু মেলানো যায়না
ফেলে আসা বিবর্ণ কলিজার টুকরা,
হাজার বছরের শেকড় থেকে উঠে আসা বটগাছ
যেমন মেলানো যায়না সেই দুঃসহ যন্ত্রণার
ছটপট করা মায়ের কান্না ভেজা আঁচলের ভাঁজ,
আজও মনে পড়ে
বাবার ভাঙা কালো বর্ণের ছাতার কথা
দড়ি দিয়ে বাধা দারিদ্রের সস্তা চশমা.
বোনের মায়াবী মুখ
আর চোখের কাজল,
আর মনে পড়ে নগরের খেঁটে খাওয়া
মানুষের ঘামের কোলাহল,
মানুষের কাছে মানুষের মনের বদল |
সময় যেন কেমন করে বদলে গেলো
তার থেকেও বেশি বদলালো মানুষের মন,
যে মন ছিল খুব আপন
বরফের প্রেমের মতন
তা যেন আঘাত পেলো স্বার্থের কঠিন শিলায়
মুখের কথা আর ভিতরের কাপুরুষ ভাবনা
দ্বিখণ্ডিত করলো মানুষের বিবেক,
এখন নাকি সোনার দরে নয়, পানির দরে
হাট বাজারের কেনা বেচায় বিক্রি হয় আবেগ,
যেন সুয়েজ খাল থেকে দেখছি ফয়েজ লেক
কংক্রিটের নিচে চাপা পড়া কষ্টের মেঘ,
আর বালিকা বধূর হিপোক্রেট জীবনের অর্ধেক |
সব যেন আজ তামাশা হয়ে গেছে
যেমন মোমবাতি আগুনে পুড়ে পুড়ে গলে যায়
খড়কুটো থেকে মানুষ এক দলা মোটা ভাতের চিন্তায়
স্বপ্ন হারায়,
আর হাতে নিয়ে পৃথিবীর সুখ খুঁজে বেড়ায়
হয়তো সেটা বিশুদ্ধ কিংবা অন্যায়,
তবুও মানুষটা আজও খুঁজে
নির্বাসনের মানুষ,
বাই সাইকেলের চাকা
যেখানে চাদর দিয়ে সময়কে যায়না ঢাকা,
তবুও
তাদের মনে ছিল ঘর বাধার আশা
একটা আবেগের পরিবার আর ভালোবাসা
হয়তো সেটাও আজ সুদূর পরাহত
নিরাশার জাপটে ধরা বাঁচার হতাশা
যেটা ঝুলন্ত বাস ধরা মানুষের মতো ঠাসা
ভাসা ভাসা |
তারপরও
মিলুক আর না মিলুক
তবুও তাকিয়ে থাকে সময়
যদি মানুষ পায় মন,
ফিরে আসে আবার হারানো দুপুর আর
স্বার্থহীন আত্মাদের নির্লোভ জীবন
অপেক্ষায় ততক্ষন
যতক্ষণ জীবন করবেনা অসত্যের কাছে আত্মসমর্পন ||