রোজকার মতো সেদিনও শাহাবাগের জ্যামে পরেছি।
কিন্তু বিরক্ত লাগে নি।
আমি দেখেছিলাম একটা পরিবার।
রমনা পার্ক থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার ফুটওভার ব্রিজে।
প্রকৃতির সবুজ বেড়ায় নীল আকাশের ছাদের ঘর।
ঘরের পাশে হাই ওয়ে।
অনেক অনেক গাড়ি।
আধা কেজি খানের মুড়ি আর পাঁচ লিটারের এক বোতল পানি হবে তাদের সম্বল।
ময়লা কাপড় পরনে।  
গোসল করে পরার মতোই আর একটা কাপড় নেই।
তাই বলে চিন্তাও নেই।
মেয়েটি ছেলেটির মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, ঘামও মুছে দিচ্ছে।
ছেলেটি তাদের বছর দেড়েকের বাচ্ছাকে কোলে নিয়ে পত্রিকা পড়ে শুনাচ্ছে তার প্রিয়তমাকে।
বাচ্চাটিও বাবার মুখে আঙুল দিয় ছোট ছোট খোঁচা দিচ্ছে।
তাতে কোনো বিরক্তি নেই।
আর একটু ভালো করে বসিয়ে নিলো কোলে।
আমারও জ্যামে পরেও বিরক্তি নেই।
তাকিয়ে রইলাম।
কোটিপতির কোটি টাকার এসিওয়ালা বাড়িটাতেও এটো সুখ হয়তো পাওয়া যায় নি।
এই বেলার খাবার তো আছেই। আধা কেজি মুড়ি আর পানি।
আর কতো লাগে?
এখন শুধু এক সাথে সময় কাটানোর পালা।
এ যেনো ভালোবাসার ঘরে সুখের সংসার।
ঘন্টা খানেক তাকিয়েছিলাম।
বিরক্ত হই নি।
গাড়িটা চলে গেলো।
হয়তো এভাবেই রাত কাটবে তাদের।
চাঁদ দেখে, গল্প করে, একে অপরের মশা মেরে দিয়ে,
ঘাম মুছে দিয়ে,  মাথায় হাত বুলিয়ে।
ঘর না থাকলেও যেনো ভালোবাসার ঘর।