আমি যে এক পথচারী
****প্রেমের কবি আসিফ খান রানা****


আমি প্রতিদিন এ পথেই পাড়ি দেই।
ছুটে চলি কর্মের বাঁধা নিয়মে।
রোজ কত শত দৃশ্যের হই ভাগীদার।
ইচ্ছে করে সেখানে ভাগ বসাতে।
সমাজের নিয়মতান্ত্রিক গণ্ডির চক্রে
সেখানে দাঁড়াতে পারি না ইচ্ছে সত্ত্বেও।
ভেতরের বিবেক জাগ্রত হলেও;
গতরের যে আবরণ দিয়েছি পোষাকে,
সে দূর হতেই বাঁধা দেয়।
শিখিয়ে দেয় আড়াল থেকে -,
তুমি ভদ্দোর লোকের সমাজতান্ত্রিক আছো।
এ পাড়ায় মাড়িয়ো না ও পা।
তোমার বিবেক আছে শুধু দেখে যাও।
এক মুঠো আহারের তাগিদে
এই ভর দুপুরে কোলের শিশু আঁচলে বেঁধে
দাঁড়িয়েছে দু মুঠো চাউল নিয়ে ভাত রাধঁবে।
সাথে আলুই দেবো পোড়া মরিচ।
পেঁয়াজ চক্রে বদ্ধ যেন তাদের জীবন চক্র।
প্যাঁচে প্যাঁচে ঝাঁজালো রস।
জীবনের মূলমন্ত্র কি খুঁজে পাওয়া ভার!
খোঁজার তাগিদে কাছে এগুলেই শুনবেন-
পেট তো চোঁ চোঁ করে বাপ
সকাল তো করেছি পাড় মুখ ধুঁইয়ে।
দুপুর হইছে কখন রান্ধুন ভাত?
আই জো স্বামী ভাতের জন্ন্যে
আমার দেবো গালাগালি।
কি কমু দুঃখের কথা!
ঘরে বেটা ছাওয়াল-ই বোঝে না!
একটু ঊনিশ বিশ্ব হইলেই অশান্তির শুরু।
কে বোঝ বে গরীবের কষ্ট?
কে দেখবে আমরা ক্যামনে দিন চলি?
কয় ট্যাহাই বা রোজগার করে স্বামী?
এই শহরে ঘর ভাড়াতেই যায় সব ।
নুন আনতে পান্তা ফুরায় য্যাহানে,
তার উপর আছে সব জিনিসের দাম।
একটু কম দামে পামু বইল্যাই তো
ঘুম থাইক্যা উঠে পোলাডারে লইয়া লাইন ধরি।
আপনারা শিক্ষিত মানুষ,
সরকার রে তো আমা গো কথা কইতে পারেন?
এই যে প্রতিদিন হুহু করে বাড়াইতেছে,
মানুষের নিত্য খাওন পরনের জিনিস।
এভাবে রোজ রোজ বাড়লে আমরা কই যামু?
সত্যি-ই তো; বলতে পারি, লিখতে পারি ।
কিন্তু আমি কার কাছে লিখবো?
কার কাছে বলবো মা’গো -
তোমার এই আবেগ ময় রাগান্বিত বাণী?
আমার ভাষার ঘরে যে তালা বন্ধ।
আমি কিছুই বলতে পারি না ।
শুধু মলিন চেহারায় আবেগ তাড়িত হয়ে বলি-
মা’ গো, কাকে বলি বলো?
নেই তো বলার মত কেউ আমার।
আমি যে এক পথচারী ।