মধুর বন্ধন
********আজ বিশ্ব মা দিবস
আমার সমস্ত গল্পের পিছনে সবসময় আমার মায়ের গল্প থাকে, আমার মায়ের প্রতিটি কথাই আমার এক একটি কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নাটকের কাহিনী। কারণ তাঁর থেকেই যে আমার জীবন শুরু ।-প্রেমের কবি আসিফ খান রানা


ছেলে-  মা আমার দু’চোখের জল?
                       তোর ভালবাসায় আমি টলমল।
মা -    পোড়ামুখো দুচক্ষের বিষ,
                       ফের তুই প্রেমে পড়েছিস!
ছেলে- মা তুই’ত আমার প্রথম প্রেমের দেখা মুখ,
                       এখানেই’ত পাই খুঁজে আমার সর্ব সুখ।
মা-     আর কত তুই আমারে জ্বালাবি,
                       এভাবে চোখের জল ফ্যালাবি?
ছেলে- কস ক্যামনে মা অমন কথা,
                       কবে দিছি তোর মনে ব্যথা?
মা-     থাক; আর গলাতে হবে না আমার মন,
                       ত’য় বাপ একটা কথা শোন।
ছেলে-  কি কথা মা বল,
                       তোর জন্য এই রক্ত করতে রাজি জল।
মা-     তুই আমার সাত রাজার ধন,
                       আমার মাথা ছুঁইয়ে করবি আজ পণ ।
ছেলে-  অমন কথা বলিস নে মা মোরে,
                       কোনো দিব্যি দিতে পারবো না’ক তোরে
মা-     বোকা ছেলে-শুনবি ত আগে,
                       তারপর না হয় বলিস যা খুশি রাগে ।
ছেলে-  তবে অমন করে বললি ক্যান?
                       জানিস নে তুই যে আমার সকল ধ্যান।
মা-     হয়েছে; শোন মায়ের কথা,
                       এমন কিছু করিস নে বাপ পাই যে মনে ব্যথা।
ছেলে-  বুঝেছি মা কেউ দিয়েছে কানে মন্ত্রণা,
                       তার কষ্টে তুই পাচ্ছিস যন্ত্রণা ।
মা-      নয় রে বাপ তেমন কিছু,
                       অযথা তোর ভাবনা মিছু।
ছেলে-  বুড়ি টার পাল্টাবে না স্বভাব,
                       ফের আমি বাগে পেলে দেবো এর জবাব।
মা-     সে তুই দিস; তোর-ই ত হীরে,
                       যত্ন করে রাখিস তারে ঘিরে ।
ছেলে-  ইস হীরে! আমি তোর কে?
                       ঐ পেত্নী এহন ভালো আমার চেয়ে?
মা-     আমায় ক্যান বলিস?
                       আমার চে পেত্নির সাথেই তো বেশি চলিস!
ছেলে-  আমি কই যাই রোজ,
                       বুড়ি টাই না নিত্য আসে নিতে খোঁজ।
মা-     সে-ই ভাল; কেউ আমার পরে,
                       অমন করে আগলে রাখুক ত’রে।
ছেলে-  আগলে না ছাই,
                       দেখা হলে সারাদিন-ই ঝগড়া করে যাই।
মা-     ঝগড়াতেই মহব্বত বাড়ে,
                       তু-ই বল ভালো লাগে কী ছাড়া তাঁরে?
ছেলে-  মা তুই কথায় চালাকি করে,
                       বুড়ি টাকা তুলে দিচ্ছিস আমার ঘরে।
মা-      আমি কই দিলাম,
                       তুই নিজেই না ডাক তুলে করে নিলি নিলাম।
ছেলে-  মা তুই ঐ পেত্নী নিস নে পক্ষে,
                       আমায় জড়াস নে অযথা তক্কে ।
মা-     জড়ানো নেই দরকার থাক,
                       আমি আর লাগাবো না নাক।
ছেলে-  আর পারি নে তোকে নিয়ে,
                       বুঝি নে ইঙ্গিতে করতে বলিস বিয়ে।
মা-     বাপ রে! কে আছে ত’র দুঃখে?
                       আমি মরে গেলে কে দেবে ভাত মুখে
ছেলে-  তাই বলে কী তোরে!
                       ঐ বুড়ি কেই আনতে হবে ঘরে?
মা-     ত’রে যদি কেউ ভালোবাসে আমার চেয়ে,
                       আর কেউ নয় ঐ বুড়ি মেয়ে।
ছেলে-  মা তোর মত কেউ বাসবে না!
                       হাজার জ্বালাতনেও এমন মধুর হাসবে না।
মা-     বাপ রে! আমি আর কত কাল,
                       এবার তো বাঁধতে হবে জীবনের চাল।
ছেলে-  অমন জীবন চাই না গো মা গড়তে,
                       যেই জীবনে তুই বিহীন হবে আমার মরতে।
মা-     কালের স্রোতে অস্তিত্ব বিলীন হবে,
                       মায়ের আশীর্বাদ ত’র মাথায় রবে।
ছেলে-  আশীর্বাদ দিয়ে কী করবো মা বল?
                       তুই ছাড়া আমি যে অচল!
মা-     যাবে না বদলানো জীবনের ভাগ্য,
                       করে নিতে হবে সব উপভোগ্য।
ছেলে- তুই আছিস বলে জীবনের এ বাঁকে,
                        আমি উড়ে বেড়াচ্ছি পাখিদের ঝাঁকে।
মা-     জন্মেছ ছেলে হয়ে দায়িত্ব এড়িও না,
                        অন্যের ঘাড়ে বসে ঘুরে বেরিও না।
ছেলে-  গায়ে’ত দাও নি লিখে কি আছে মোর,
                        কর্মে ই দেবো আমি কেমন ছেলে তোর।
মা-     নম্রতা ভালো; অন্যায় আপোষ করো না,
                        সত্যের দাবিতে পিছু হটে যেওনা।
ছেলে-  জানি পা নয়;জুতো খুলে দিতে হয় মুচি কে,
                        বংশের পরিচয় মেলে তাঁর রুচি তে।
মা-     নিমন্ত্রন্ন হলে যেও দু-মুঠো ভাত খেয়ে,
                        কারো আশায় থেকো না’ক চেয়ে।
ছেলে-  বুঝি না গান বাজনা;জারি সারি ফোক,
                        তবে বুঝি মা;আমি খেটে খাওয়া লোক।
মা-     বড় নয়; চেষ্টা করো মানুষ হবার,
                        মনে রাখবে শত্রু হয় না বোবার।
ছেলে-  মা’গো শিখিয়েছ সাহায্য করে তাকাতে নয় পিছে,
                        সে লজ্জা পাবে মিছে।
মা-      চাইতে পারে না মা;পারে সব দিতে,
                        গরমে উদাম; জড়িয়ে রাখতে শীতে।
ছেলে-   জানি গো মা; সাধ্য নেই প্রভুর,
                        মায়ের দোয়া করতে কবুল; বর করে না সবুর।
মা-      মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের স্বর্গ,
                        এতে মায়ের কখনো নেই বিন্দুমাত্র গর্ব।
ছেলে-   মা হলো স্নেহের ভান্ডার যা নিঃশেষ হয় না,
                        এ স্থান নিরাপদ-তাই কোনো ভয় না।


বাকি ২০ লাইন  ............ অন্য কোনো দিন