সকালে ঘুম থেকে জেগে মাকে বলি-
গাঁয়ে এসেছি শুনে কবিতার বন্ধুরা বাংলা মায়ের গ্রামীন রসদ চেয়েছে ,
কি দেই বলতো মা?
চেয়ে দেখ ভোরের শিশির স্নাত সবুজ ঘাসে নাম না জানা ফুল।
তাকাও নয়ন মেলে মাঠে প্রান্তরে কচি ধানের পাতায় রোদের ঝলকে মুক্তোর দানা।
গাঁয়ের আকাশ সীমাহীন, সকালের কোমলতা নিয়ে বিশাল রূপের বাহার।
বসন্ত এখনো বাংলার গাঁয়ে সকালের কোকিলের কুহু ডাকে।
ঘরে ঘরে ভাত ফুটানোর ফেনার ধোঁয়ার গন্ধ।
শত ব্যস্ততার মাঝে পল্লীবালার মুখে নেই ক্লান্তি, মধুময় হাসি।
(আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি)


তন্দ্রায় ছিলাম তাকিয়ে দেখি সকাল গড়িয়ে দুপুর,
কবিতার রসদ চাই পল্লী মায়ের কাছে,
শুনিতে কি পাও ক্লান্ত কৃষকের দরাজ গলায় পল্লী গানের সুর।
শাল বনের ছায়ায় দূরের পথিক, রাখাল, কৃষক একসাথে তামাকের টানে শ্রান্তি খোঁজে।
শালের ফুল পরম মমতায় ঝরে পড়ে ওদের মাথায়,
নিবিঢ় ছায়া, মাঝে মাঝে একটু শীতল হাওয়ায় শ্রান্তিতে জড়িয়ে আসে চোখ,
ওদের তরে আজি এই স্বর্গের সুখ।
পাঠশালা থেকে ফিরে গ্রাম্য দুরন্ত বালক, বুকে প্রত্যয় মুখে তার বিশ্ব জয়ের হাসি।
(আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি)


পল্লী মা কবিতায় সন্ধ্যার রসদ দাও,
ভাল করে দম নাও নাসা রন্ধ্রে পৌছলো ধূপের ধোঁয়া!
সবার মাঝে বাড়ি ফেরার কি অদ্ভুত চঞ্চলতা,
সারাদিনের কর্ম শেষে প্রিয়কে কাছে পাবার আনন্দ,
সন্ধ্যাময় এক গন্ধে ভরে উঠে বুক।
পশু পাখির বাড়ি ফেরার হরেক শব্দ।
ছোট ছোট ছেলে মেয়ে সুর করে উচ্চস্বরে পড়া মুখস্ত করে,
দাওয়ায় বসে জোয়ান চাষী চোখে তাঁর কামের তাড়না,
অন্দরে পালায় নব বধু তাঁর চোখে দুষ্টের হাসি।
(আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি)


মায়াময় রাত্রি কবিতার রসদ দাও পল্লীমাতা,
চোখের মাথা খেয়েছিস, চেয়ে দেখ ভরা চান্দের আলোয় আলোকিত রাত,
জোসনায় ভাজে হরেক ফুলের ঘ্রান।
রাত্রির গভীরে কাঁপে রাখাল ছেলের গান।
শিয়ালের হাঁকে দূরবনে ফিরে আসে প্রাণ।
জমে উঠা রূপকথার আসর বাড়ির মুরব্বীকে ঘিরে।
বাঁশের বেড়ার ফাকে চান্দের আলো খেলা করে গরীব চাষার ঘরে।
সেই আলোতে বধুয়ার নথ খায় গরীব জোয়ান চাষী।
(আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি)


- কবিতাটি আসরের প্রিয় কবিবন্ধু শিমুল শুভ্রকে উৎসর্গ করলাম। প্রিয় বন্ধু তোমার জন্য তথা আসরের জন্য গ্রাম থেকে আনা আমার উপহার।