পাঁচ পাঁচটি বছর পর মুহাম্মদ ফিরে যায় মা আমিনার কোলে
মায়ের কোলে বসে ছোট্ট শিশুর দু’চোখ বাবাকে খোঁজে!
তবুও তো একদিন শেষ হয়ে যায় অপেক্ষার পালা!
বাবার কবর দেখে ফেরার পথে আমিনা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে
মাথার উপরে নীল আকাশ
মরু প্রান্তরে উটের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদে বালক মুহাম্মদ!


দু’বছর পরে দাদা মোতালিবও তার পথ ধরে
চাচা আবু তালিবের সাথে মক্কায় শুরু হয় নতুন জীবন
সে বিস্ময়ে চেয়ে থাকে, কতকিছু জানার বাকী! চেনার বাকী!
একদিন আবু তালেব তাকে সাথে নিয়ে চলে সিরিয়ায়
কাফেলা এগিয়ে চলে, কতকিছু দেখে,অকারণে প্রশ্ন করে
কত বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে তার সাথে।
ফিরে এসে তাকে শুধু ডাকে ইশারায় নীল আকাশ,উন্মুক্ত প্রান্তর
এক মোহময় ডাকে ছুটে চলে মেষ নিয়ে নির্জন পাহাড়ের ঢালে
উদার আকাশের তলে সমাজ সংসারের কোলাহল থেকে দুরে
প্রকৃতির নিবিড়তায় অসীমের স্পর্শে নীরবতার গহিনে
যেন এ বিশ্ব সৃষ্টির রহস্য গোপনে সে শুনতে পায়।


অন্যদিকে চলে মেলা,কাব্য-যুদ্ধ,ঘোড়দৌড়,জুয়াখেলা
যুদ্ধ, ঘরে ঘরে ক্রন্দন, হাহাকার, কোন প্রতিকার নেই!
অথচ তিনি ভাবেন অন্য কথা, আর্ত পীড়িত ব্যথিতদের কথা
যুদ্ধ থামাতে তরুণদের নিয়ে গড়লেন ‘হিলফ-উল-ফুজুল’।
তাদের একহাতে থাকে সেবা-প্রেম
অন্য হাতে খোলা তলোয়ার
তাদের বুকের পাঁজরে জমা হতে থাকে নরম ভালোবাসা
তারা খুঁজে ফিরত
কোথায় অনাথ শিশু কাঁদে অবিরাম ক্ষুধার যন্ত্রণায়
কোথায় দুঃস্থ রুগ্ন মানুষের আর্ত-চিৎকার ভেসে আসে
কোথায় অসহায় নারীর ক্রন্দনে বুক ফেটে যায়
তাদের পাশে সবার আগে অন্ধকারে ছুটে আসে মুহাম্মদ
আরব-বেদুইনদের কাছে সে তখন ‘আল-আমিন’।