১৯৭১সালে 'স্বাধীন' নামক এক ছোট্ট শিশুর জন্ম হয়েছিল
হাঁটি হাঁটি পা করে কৈশোর,যৌবন পার করল
সেই ছোট্ট শিশুটি পায়নি কোন উপযুক্ত শিক্ষকের সান্নিধ্য
তার চারপাশের পরিবেশের নিজের স্বার্থ সিদ্ধির উন্মোত্ততায়
তার মানবিক চরিত্রের দিকে মনোযোগ কেউ দেয় নি
নিজের ক্ষুধা মিটিয়েছে সে অন্যের ক্ষুধা চোখে দেখায়নি
আত্মমর্যাদা শিখিয়েছে তাকে অন্যের মর্যাদা বোঝায়নি
ধর্মান্ধতা শিখিয়েছে ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চা শেখায়নি
শিক্ষা গ্রহণ করেছে সে কিন্তু শিক্ষা আত্মস্থ করতে বোঝায় নি
মুখস্থ বিদ্যায় পারদর্শী  করিয়েছে তাকে
কিন্তু বিদ্যা প্রয়োগ করতে শেখায়নি
একাত্তরের দানোর গল্প শুনিয়েছে তাকে
কিন্তু নিজের ভেতরকার দানবের নাশ করতে শেখায়নি


আজ সে ঊনপঞ্চাশে ঠেকল
নতুন সন্তানদের সে শেখাবে কি?
আত্মকেন্দ্রিকতা?স্বার্থপরতা?ধর্মান্ধতা?
আজ যে সে বড্ড নিঃস্ব, আগের চেয়ে দূর্বল
তাহলে তার ঊনষাট,ঊনসত্তরে তাকে এসব কি তাড়িয়ে বেড়াবে?


একদিন ঘুমের ঘোরে সে স্বপ্ন দেখে
তার দিকে তেড়ে আসছে কেউ
ক্ষুধার্ত শকুনের মতো খুবলে খাচ্ছে তার মাংস
ভূমি ও পতাকা তার দু'সন্তানকেও যেন শান্তিমতো ঘুমোতে দিচ্ছে না
বুমেরাং হয়ে আসছে যেন সব, দুমড়ে মুছড়ে দিচ্ছে তার পরিবারকে
এ যেন সাক্ষাৎ দাবানল, জ্বলন্ত আগুনের লেলিহান শিখা!
পই পই করে তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে দুঃস্বপ্ন!


ঘুম ভাংগে তার!
সে ভাবে সে কি আদৌ স্বাধীন হয়ে স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে পেরেছে?
দৃশ্যমান দানব থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে স্বাধীন হয়েছে ঠিকই
কিন্তু আত্মসৃষ্ট অদৃশ্য দানব বুঝি তার পিছু ছাড়ছে না!


-দুঃস্বপ্ন
-অস্মিতা তালুকদার
২৯/৪/২০২০