একটা অপরাধ বোধ কুড়ে কুড়ে খায় প্রতিদিন;
আমার ভুলে একটা মহাজীবন নষ্ট হয়েছিল।
তানাহলে, তুমি থেকে যেতে এই সংসারে
আর কিছুদিন আরও কিছু বছর...
হাসি কান্নার সুরে সুরে জগত মাঝারে।
বিশাল নিরাপত্তার ছাতা যেন শান্ত স্নিগ্ধ বটচ্ছায়া ।
হলনা, হতে পারলনা,
বুকে একদলা কান্না গুমরে মরে।
সে হয়তো আমারই জন্য।

শেষমুহূর্তের কথা মনে হলেই
একটা গরম লাভাস্রোত শরীর জুড়ে বয়ে যায়।
মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত পুড়তে থাকে,
আমি জ্বলছি... আমি পুড়ছি...
জ্বালা যন্ত্রণা সহ্য করছি...
আমি সুপারসনিক শব্দে চিৎকার করছি
আমাকে বাঁচাও আমাকে বাঁচাও...
নাহ, কেউ শুনছেনা কেউ শুনতে পারছেনা।

তখনই তুমিই এসে সামনে দাঁড়াও বৃষ্টিধারার মতন;
মাথায় হাত রেখে শান্ত স্নিগ্ধতায় বলতে থাক
-খোকা, এমন করে ভেঙে পড়তে নেই...
জীবনের প্রতি বাঁকে বাঁকে মৃত্যু লুকিয়ে থাকে।
সবার সবটা জানা নেই,
অনেকটায় থাকে অজানার গহ্বরে।
তাই কিছু কিছু না চায়লেও হয়ে যায়।
আর সবচেয়ে বড়কথা আমিও মৃত্যুঞ্জয়ী নই...
অক্সিজেন মাস্ক ঠিক সময়ে পড়িয়ে দিয়েছিলে,
সিলিন্ডারের চাবি ঘোরাতে হয়েছিল চরম ভুল।
মৃত্যু ছিল শিকারি বিড়ালের মতন ওতপেতে
হাতের ট্রাম্পকার্ড ফেলে তোমায় হারিয়ে দিয়েছে।
এই মস্ত জীবন জুড়ে জীবন আর মৃত্যু
সবসময় এমনি খেলা খেলে চলেছে।
কখন জীবন কখন মৃত্যু হারে বা যেতে।
তাই এই অপরাধবোধে নিজেকে ক্ষয় করোনা।
এই ভুল থেকেই তুমি শিক্ষা নাও
এমন ভুল আর জীবনে যেন না হয়।

আমিও অনেক মৃত্যুর ফাঁদ থেকে বেঁচে ফিরেছি।
স্থির মগজের অচঞ্চল তিতিক্ষার ভাবনায়।
তুমিও ভাবনা চিন্তায় এমনি দিগ্বিজয়ী হয়ে ওঠ।
আমার আশীর্বাদ সবসময় থাকবে,
একদিন ঠিক তুমিও ক্রমশ হয়ে উঠবে
আমারই মতন নিরাপত্তার শান্ত স্নিগ্ধ বটচ্ছায়া।