মা তাড়াতাড়ি করো, দেরী হয়ে যাচ্ছে।
আর সামান্য সময় বাবা ঠাকুর ঘরটা ঘুরে আসি,
কি হলো মা! আমি যে প্লেন মিস করব;
এই যে বাবা আসি আসি, তোর বাবার ছবিটা'না
জঞ্জালের ভিতর ছিল; আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবে
দেখ খোকা দেখ, একবার চেয়ে দেখলে
মনে হবে ছবির ভিতর থেকে তোকেই দেখছে।
    তোকে মানুষের মতন মানুষ করতে চেয়েছিল যে ;
কি হচ্ছে মা!এই বাড়ির কিছুই এখন আমাদের নয়;
এই দেখো তোমার বৌমার ঘন ঘন ফোন, চলো যাই ;
পরিপাটি দাঁতে হাসি  – তুলসী মঞ্চে একটা নমস্কার করি।
তাহলে’তো আর কেউ কিছু বলবে না! তাই না খোকা ;


তোর বাবার বসানো গোলকচাঁপা আমার খুব শখ ছিল কিনা ?
ও খোকা দুটো ফুল নেব! নিই না কেউতো দেখছেনা :
কিচ্ছু নিতে হবেনা মা! তাড়াতাড়ি এইবেলা চলো ;
খোকা তুই আমাকে বকছিস, একদিন তোকে বকেছিলাম
তার শোধ তুলছিস; আমরা তোর ভালোর জন্য বলেছিলাম।
তুইও নিশ্চয় আমার ভালো চাস ; কিন্তু কোথায় যাব  বলতো?
আমরা সবাই মিলে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছি মা ।
মায়ের মুখ ঝলমলে - তাহলে আমিও যাচ্ছি তোদের সাথে!
       না মা তুমি নও! সহসা মায়ের মুখ যেন বাদলের মেঘ
তুমি যাচ্ছ বৃদ্ধাশ্রমে, কথাবার্তা সব হয়ে গেছে চলো :
মা পাথরের মত নিথর – আমি কোথাও যাবনা বাবা ;
ছেলের জোর ...ঝাপটাঝাপটি...মা পারেনা ...পড়ে  যায়।


বনলতাকে উঠতে সাহায্য করে বাবার বন্ধু সৌমেন কাকু
ওঠো বনলতা হাতটা শক্ত করে ধরো চেষ্টা করো, পারবে;
শান্তস্বরে ছেলেকে বলেন – তোমরা যাও উনি এখানেই থাকবেন।
কিন্ত কাকু বাড়িটাতো কিনে নিয়েছেন অমৃতলাল মহাশয়;
     ওটা আমার ছদ্মনাম; এখন থেখে বাড়ি বনলতার
     এটাই ওর বৃন্দাবন এটাই ওর বারাণসী !
     এখন থেকে আমি আর বনলতা এখানেই থাকবো !