রাতের অন্ধকারে একলা চলেছে মেয়ে
কোথায় চলেছে ?
কোন নিরদ্দেশের পথে?
নির্জন রাজপথ ছাড়িয়ে, আলপথ মাড়িয়ে,
ততোধিক স্থির চিত্তে, ধীর গতিতে পায়ে পায়ে
ইছামতির বালুকাচরে।
নদীর মতন মেয়ের দুচোখে এখন খরা।
জলের ধারা শুকিয়ে গেছে
নদীর মত দাগ রেখেছে গালে...
শরীরে কাপড়ের অবিন্যস্ত ভাঁজে
পথ হারিয়েছে সে অশ্রুনদী।


একসময় সে শরীরে উপুড় করে
ঢেলে দেয় এক তরল জলধারা।
উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে যায় বাতাসেতে।
কি জানি কি এক উৎকণ্ঠাতে
ঝিঁঝিঁর কিঙ্কিন শব্দ হয়ে গেল স্তব্ধ।
নদীর পাড়ে শিমুলের ডালে
শকুনের বাচ্চা বোধহয় কেঁদে উঠলো।
ডানা ঝটপটিয়ে বাদুর উড়ে গেল অন্যত্র...
মেয়েটা নীরবে আকাশপানে চেয়ে দেখে।
অগুন্তি আকাশের তারারা যেন নীরব দর্শক হয়ে
একাকিনীর একাঙ্ক নাটক দেখে একরাশ মুগ্ধতায়।
এরপর কি হয়? কি হয়?
এক অজানা উত্তেজনা...
শাড়ির ভাঁজে লুকানো দেশলাই খুঁজে
মেয়েটা জ্বালানোর চেষ্টা করতে থাকে।
এবং বার্থ হয়, মেয়ে তবুও হাল ছাড়েনা।


দীর্ঘ প্রচেষ্টায় একবার আগুন জ্বলে ওঠে
আচমকা ভয় পেয়ে যায়
বৈশাখী ঝড়ের মতন চকিতে
সে আগুন কে যেন এক ফুঁয়ে নিভিয়ে দেয়।
মেয়ে দু'পা পিছিয়ে যায় - একি নীল'দা
হ্যাঁ আমিই সেই দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দেওয়া
তোমারি এক নিভৃত একান্ত প্রেমিক ।
এভাবে তোমাকে আমি মরতে দিতে পারিনা।
না! নীল'দা! তুমি সবটা হয়তো জানোনা?
জানলে আমায় ঘেন্না করবে ছোঁবেনা।
আমি সবটা জানি সুলগ্না ...
তুমি আর এখন একা নও ...
তুমি তোমার শরীরে আর একটা জীবন
আর একটা হৃদপিণ্ড ধকধক করছে
পৃথিবীর আলো দেখবার প্রবল ইচ্ছায়।
ক্ষতি নেই সে আসুক...
তবু তুমিই আমার সেই একান্ত এক প্রেমিকা।
এই বিশ্বের কেউ জানবেনা কোনদিন...
তোমার সকল বিষ পান করে
আমিই হতে চাই একমাত্র তোমার নীলকণ্ঠ।


সুলগ্নার চোখে বন্যার মত জল
দুকুল ভাঙা ঢেউ ভাসিয়ে দেয় হৃদয় প্রান্তর।
খড় কুটোর মত আঁকড়ে ধরে
লতাপাতার মতন ঘিরে বাঁচতে চায় সুল্গনা।
বাহুলগ্না দুটি হৃদয় থরথর করে কাঁপতে থাকে।
এক হৃদয় অন্য হৃদয়কে স্বান্তনা দেয়।
বলে এমন করে কাঁদতে হয়না।