তুমি আসবে বলে
বৃষ্টিকে ছুটি দিয়েছিলাম নীল খামে।
সে বলেছিল - আমার আর কিছুদিন থাকার কথা।
আমি থাকব। আমার ছুটির কোন প্রয়োজন নেই।
তুমি আসবে বলতেই , হেসে ফেলে সে - বেশ তাই হবে।
বাঁধের পারে যারা থাকে তাঁরা এখন পরম স্বস্তিতে।
ঠিক যেন বাঁধন ছাড়া নীল আকাশের মেঘের দল।


তুমি আসবে বলে
ওদের বার্তা পাঠিয়েছি সোনালী খামে।
পার্কের কামিনী উঠানের শিউলি টবের পদ্ম
আর রেল লাইনের ধার ঘেঁসে কাশ ফুলেদের।
সবাই তারা একে একে কথা রেখেছে
প্রতি সকালে পার্কের কামিনীরা ঝরে ঝরে পড়ে;
উঠানের শিউলির চারা গাঝাড়া দিয়ে ফুল ফোটায়;
রেল লাইনের ধারে মেঘের ভেলা থেকে,
কাশফুল ধার করেছে মখমল সফেদ রঙ।
শুধু অলস শতদল ফুটি ফুটি করেও এখনো ফোটেনি।


তুমি আসবে বলে
শহর থেকে শহরতলি গ্রাম থেকে গ্রামান্তর রাত্রি জাগছে।
সেজে উঠছে নব নব রূপে যেন নবোদয়।
তোমার আসার খবর এখন সব্বাই জানে
রাতের শেষ ট্রেনে কেউ ফিরে আসছে,
মেঘের পালকি চড়ে হয়তো কেউ আসছে
প্রবাসের পরবেশ ছেড়ে ছুঁড়ে প্রিয় আসছে;
সকালের নগর কীর্তনে শুনি তাঁর চরণ ধ্বনি
রসকলি আঁকা বৈষ্ণবীর গলায় অপূর্ব আগমনী।


তুমি আসবে বলে
ইথার তরঙ্গে নিত্য প্রয়োজনীয়র নানান বিজ্ঞাপন।
অনন্য বিলাসে নিজ নিজ প্রয়াসে আনন্দ সব নিকেতন।
কি আশ্চর্য! কাঞ্চন ফোটা গাছে গাছে
টুনটুনিটাও টুঁইটুঁই শব্দে বলে গেল
তুমি নাকি এসে গেছো সবার
হৃদমাঝারের মাঝখানে।