মাস কাবার না হতেই
কারো কারোর মাসকাবার হয়ে যায়।
আজ মাসের মাঝামাঝি তবু ও মাসকাবার ।
নিম্নচাপের বৃষ্টির জানার কথা নয়
জগতব্যাপি অসুখের ও জানার কথা নয়
জানত শুধু পেটের ক্ষিদের আগুন ।
রাতদিন শুধু গিলতেই থাকে ...
মালিক বলেছে মুন্নির বাবাকে - দরকারে খবর দেবে,
তাই তিন মাসের অগ্রিম দিয়েছে।


মুন্নির মায়ের কাছে খবর ছিল।
কদিন ধরেই গলা প্রায় শুকিয়ে আসছিল।
কাউকে বলবার সাহস হচ্ছিল না ।
ঘরে চাল বাড়ন্ত ওদের কি করে দুটো ভাত দেব।
আজই হয়ে গেছে মাসকাবার।


মুন্নি বেশ কয়েকবার বাবাকে আবদার করেছে
- বাবা টিউশনের মাইনেটা লাগবে।
হাসি মুখে ওর বাবা বলেছে - সব দিয়ে দেব মা।
যেদিন রেগে গিয়ে চিৎকার করেছিল
-অভাবের ঘরে আর পড়তে হবে না।
      অন্য কোন কাজ দেখে নাও,
তা'নাহলে ঘরে চুপচাপ বসে থাক।
মেয়েটা আঁতকে উঠেছিল বাবার ঐ রূপ দেখে।


রোজ সকাল হলেই সে বেড়িয়ে যায় কাজের আশায়।
দুপুর গড়ালে ঘরে ফিরে আসে।  
মুখে পড়ন্ত রোদ্দুর নিয়ে দাওয়ায় বসে খাবার খেতে ।
কি দেবে আজ। কর্কশ সুরে কাক ডাকছে। যাহ্‌...
হটাত মনে পড়ল পাশের বাড়ির রাঙা'দির কথা ।
এক সময় বলেছিল - কোন দরকারে আমার কাছে আসিস।


ব্যস! সমস্যার সব সমাধান হয়ে গেল নিমেষে।
- যা লাগে নিয়ে যাও ঐ ভাঁড়ার থেকে। টাকা ও দেব!
শরীরটাকে জমি দেখার মতন দেখে চাপাস্বরে বলল
- এসো সন্ধ্যাবেলায় । ঘণ্টাখানিক কাজ আছে।
তবে বাড়ির কেউ যেন না জানতে পারে ।
একটু সাবধানে... পরিস্কার হয়ে এসো।


মুন্নির মায়ের শরীরে কেমন ঠাণ্ডা বাতাস ছুঁয়ে গেল।
মনে মনে ভেবে নেয় - যা হবে সেটা ভালই হবে?
      সকলের খিদে মেটাতে গিয়ে,
নিজের গতরটাকেই খাদ্য করে তুলতে হবে।