বার বার বলার পরে কেমন করে জানি হাত ছেড়ে গেল ;
এত ভিড়ের ভিতরে কি করে খুঁজে পাব ডালিম'দার মাকে।
সেতো কিছুই জানেনা এই শহরের পথ ঘাট ঠিকানা ।
রাস্তা পার হতে গিয়ে পিচ রাস্তায় ভয়ে বসে পড়ে,
বলে- পারব'না বাবা, গাড়ি চাপা পড়ে যাব ।
শেষে অনেক বুঝিয়ে চোখ বুজে রাস্তা পার হয় ।
     আজ দিনটাও তেমন।
সমানে যখন তখন হালকা ভারি বৃষ্টি।
কেমন হাঁ করে উঁচু শহীদ মিনার দেখছিল বুড়ি ।
দুরদারিয়ে বৃষ্টি আসতেই কে কোথায় ছিটকে গেল কে জানে?


পঁচিশ বছর আগে এমনদিনে ডালিম'দা এসেছিল শহরে ।
পাড়ার দাদারা সাথে করে এনেছিল । সে আর গ্রামে ফেরেনি ।
মা আর ছেলের সংসার তখন থেকে বেতালা চলছিল...।
       ডালিম'দার মা কান্নাকাটি করে,
       ছেলের জন্য। কিন্ত লাভ হয়নি।
ফি বছর এইদিনে আসবার জন্য সবাইকে সে বায়না করে ।
ছেলেকে খুঁজে নিয়ে গ্রামে ফিরবে। এখন নিজেই গেল হারিয়ে।


কর্মকর্তারা ভীষণ ব্যস্ত । কোন দায় নেই অমলাবালা দাসীর জন্য।
''হাঁ হাঁ দিচ্ছি দিচ্ছি । আপনারা দিব্যি আছেন। দেখছেন কত কাজ!।
দেখবেন ঠিক গ্রামে পৌঁছে গেছে কাল সকালবেলা।
মাইকে নাম শোনাবার জন্য রকমফের আদিখ্যেতা ।
বললাম উনি ছেলেকে খুঁজতে এসে নিজেই হারিয়ে গেছেন ।''
একবার দেখুন না চেষ্টা করে । যদি পাওয়া যায়....
আবার বৃষ্টি সাথে ভীষণ ঝড় বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ঘন ঘন।


ঝড়ের তাণ্ডব শেষে দেখি। চারিদিক শশ্মানের স্তব্দতা।
বাঁশের খুঁটি ধরে লেপটে আছে প্রাণহীন অমলাবালা দাসী ।