অরুনাচল


       এই চিঠি যখন পাবি আমি হয়তো চলে যাব অন্য এক দেশে। যদি এই ক্ষয় রোগ থেকে মুক্তি পাই চলে আসব তোদের সাথে মিলতে। গোপন সভা হবার কথা ছিল বন্ধ করবিনা। চালু রাখবি ... কেষ্ট বাউরি উপর যে অত্যাচার হয়েছিল । তাঁর যেন প্রকৃত বিচার হয়। মধুর ছেলে পান্তা বলেছিল- স্কুলে গেলে ওর বাবা বাড়ির ভাত দেবেনা। ওকে জুতো পালিশ করতে যেতেই হবে স্টেশনে। ওর পড়তে ভাল লাগে, লেখা পড়ায় ও খুব ভাল, জুতো পালিশ ওর ভালো লাগেনা। ও যেন পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারে তুই দায়িত্ব নিবি।
      শুনে রাখ, অরুনাচল খেয়ে পরে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকবার অধিকার সকলেরই আছে। কিছু মানুষ কিছু ক্ষমতায় অনেক মানুষের আধিকার চুরি করে রাখে। সেটা তুই কখন হতে দিবিনা । অধিকার তখন ছিনিয়ে নিতে হয়। হয় কলমের জোরে, চিৎকার করে মিছিলে হেঁটে প্রতিবাদ করে।
        জানিস এই অকালে আমার এখন যাবার কথা নয় । তবু যেতে হবে। তোকে এই কঠিন পরিবেশে রেখে যেতে ইচ্ছা আমার ছিলনা। তবু... যেতে হচ্ছে। পত্রিকার সম্পাদনা তোকেই করতে হবে। আমার বই  বিক্রির টাকা তুই তোর প্রয়োজন মত ব্যবহার করবি। আমার প্রিয় কলমটা তুই রেখে দিস।
       আর একটা গোপন চিঠি আমার ঘরের ঘুলঘুলিতে রাখা আছে । সেই মেয়েটার জন্য যে আমাকে আগুনের মায়া ঝরিয়ে বলেছিল ... । থাক! ... ফিরে এসেই না হয় বলব  আজ শুধুমাত্র তোকেই জানিয়ে রাখলাম। ও আমার নাম অরুণোদয় বলেই জানে। তোকে ও চেনে।
          রাতের সাইরেন বেজে চলে গেল এক দিক থেকে আর এক দিকে। আমার শরীরে যে যন্ত্রণাগুলো ছিল এখন যেন উধাও। ঘুম আসছে... দুচোখ যেন দু-মন ভারী। কলমের লেখা নিয়ন্ত্রনে থাকছেনা...


ইতি...  
তোর  সু...