আসা যাওয়ার পথে যখনই সুযোগ পাই একবার খুলে দেখি। যদি কিছু এসে থাকে। একদিন মা বলেছিল রোজ রোজ কি দেখিস, জানিস না এখন লেটার বক্সে চিঠি আসেনা। আমি কেমন বোকার মতন চেয়ে থাকি মায়ের মুখের দেখে । মা তখন হেসে হাত বাড়িয়ে মাথার চুলে আঙুল বুলিয়ে দেয়। এখন মা নেই, তবু যখন লেটার বক্স খুলি অজান্তেই মায়ের মুখটা ভেসে ওঠে। তারপর সেই মাথার চুলে মা যেন হাত বুলিয়ে দেয়। কেমন যেন চোখ বুজে আসে।


রোজ ভাবি হয়তো আসতে পারে আজ। কিছু হলুদ বাদামি নীল কিম্বা সবুজ খামে চিঠি। এই ইচ্ছাটাকে বাঁচিয়ে রেখেছি অনেক সন্তর্পণে।  জানি, কেউ কেউ ভাববে আমি এক বিশ্ব বোকা বা অন্য এক কিছু। ভাবুক আমার কিছু যায় আসেনা আমি ঠিক আমার মতন। অন্যের মনের মতন নাইবা হলাম।


একদিন কিন্তু সত্যিই পেলাম একটা সাদা খাম।  অবাক হলাম সাদা খাম কোনদিন ও ভাবিনিতো!  ভিতরে একটা চিঠি যেন ওটাই একটা প্রাণ ভোমরা ।  চিলেকোঠার ঘরে গিয়ে পড়তে চাই । আমার নামে চিঠি কে পাঠাল ? তার নাম নেই কেন ? আমাকেই পাঠাল কেন? হাজার প্রশ্নের ভিড়। কি জানি কি মনে করে এক ছুটে এক্কেবারে ছাদে।  ৩৬ টা সিঁড়ি এক নিমেষে লাফিয়ে এসেছি বলে বুকের শ্বাস খুব জোরে জোরে পড়ছে। নিজেকে একটু আশ্বস্ত করে চিঠি খুলে ফেললাম। চিঠি পড়া শেষ হতেই বৃষ্টি নামল চিলেকোঠার ঘরের ভিতরে...


বন্ধু,              
স্বপ্নটাকে যত্ন করে জাপটে ধরে বাঁচিস। আমার মতন যেন পঙ্গপালে খেয়ে না নেয়। বলতো স্বপ্ন হারিয়ে কি বাঁচা যায়???


ইতি স্বপ্ননীল