অনেক অনেক কিছু রয়ে গেছে আমার ওই চিলেকোঠার ঘরে।
যেগুলো ছিল আমার ভীষণ প্রিয়।
লাল নীল গাপ্পি মাছ রাখার বয়াম ভেঙে যাওয়া লাল রঙের লাট্টু।  
শেষ বাজি রেখে ঘুড়ি ভোকাট্টা  হয়ে যাওয়া
ঐতিহাসিক সেই লাটায় খানা ।
অনেকের ভিড়ে চিনতে কষ্ট হয়না।
হেরে যাবার পর তোর চোখে জল দেখেছিলাম
লাটাইটা তুই টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে উপহার দিয়েছিলি।
আমি বলেছিলাম কেন কিনেছিস?
তুই বলেছিলি -মুকুল তোর জন্য আমি সব করতে পারি।
আমি তখন থেকেই একটু একটু করে
স্বপ্নের বাড়ি গোপনে বানাতে শুরু করে দিয়েছিলাম।
তারপর একদিন ভোকাট্টা ঘুড়ির মতো জীবনটা হয়ে গেল।


তুই চলে গেলি অন্য শহরে আমি আমার শহরে।
যাবার সময় কথা হয়েছিল চোখের জল ছিল উদাস ভাবনা ছিল।
সত্যি ভেবেছিলাম আবার আমাদের দেখা হবে।
গাছে আমের মুকুল আসে,
আকাশ ভেঙে বৃষ্টি পড়ে
কাঁসর ঘণ্টায় আগমনী আবাহনের বিসর্জনের বাজনা বাজে,
ফাগুনের দিনে কৃষ্ণচূড়া লাল হয় ।
আমাদের আর দেখা হয়না।


ঘুড়ির দিনে আমি আর আকাশ দেখিনা ।
তবু মোমবাতি চাঁদিয়াল পেটকাট্টী খড়মুজ্জা
চোখের সামনে দিব্যি উড়ে বেড়ায়।
সেবার বেশি হয়ে যাওয়া কাঁচের গুরোর কড়া মাঞ্জায়
তোর হাত কেটে রক্ত ঝরেছিল ।
তুই কিন্তু কাঁদিসনি বরং হেসেছিলি।
যদি ও জানি হাতের যন্ত্রণায় রাতে তোর জ্বর এসেছিল ।
তোর কথা ভাবতে ভাবতেই ঘুড়ির প্যাঁচ ভুল খেলে হেরে গেলাম...
আমার ঘুড়ি ভোকাট্টা।
বেহাওয়ায় হারিয়ে গেল আমার সাধের ঘুড়ি।
আমি কেমন বেমানান হয়ে গেলাম এই শহরের কাছে।