আমি রাষ্ট্রের পায়ে চুমু খেয়ে বলি, তুমিই তো মহান,
এইতো জীবন, এর চেয়ে ভাল আর কোন রাষ্ট্র নেই,
ভাল সমাজ নেই,
এর চেয়ে বেশি ভাল থাকতে নেই।
ন্যায়ের র‍্যাংকিং-এ তুমিই সেরা, আইনের শাসনে তুমি শ্রেষ্ঠ,
তোমার পদতলে রাখা আছে অবনত মস্তক এই গোলামের,
তোমার জিকিরে সদা পুষ্ট এ গোলামের ওষ্ঠ।


হে মহা রাষ্ট্রধিরাজ, পরম রাষ্ট্রভট্টাকর,
আমাদের ভালোর জন্যে তোমার কত চিন্তা! ইংরেজিতে প্ল্যান.... বাংলায় পরিকল্পনা,
সাধারণ এসব বুঝে না।
তাই বলে মহান তোমার রাগ করা একদমই মানায় না।
অসীম ক্ষমতাধর, অসীম শক্তিশালী প্রিয় রাষ্ট্র, রাগলে তোমার কর্তৃত্বকে ছোট দেখায়,
ওরা সমালোচক, জন্মের পর আর কিছুই শেখেনি।
বরং সিস্টেমে ফেলে দিও,
মিডিয়া, কাউয়া, বিভিন্ন জাতের পক্ষী, বেড়ার ফাঁকের অক্ষি; কেউ যেন টের না পায়।


হে উন্নয়নের আলোকবর্তিকা, আলো হাতে এসেছ আলোর যাত্রী, লোকে তোমায় ভুল বুঝে ভীষণ....
ওদের তুমি শিখিয়ে দাও,
দেখিয়ে দাও রাশি রাশি ভিডিও ক্লিপ, ইমেজ, প্রামাণ্য ছবি, ব্লগ।
আজ চীন, রাশা কিভাবে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে, ওখানেও আমাদের মত রাষ্ট্র ছিল।
আজ তারা মহারাষ্ট্রধিরাজে পরিণত হয়েছে।


হে প্ল্যানিংশ্রেষ্ট্রা রাষ্ট্রপিতা,
তোমার প্ল্যান এই অশিক্ষিত, ভুখা, নাঙ্গা, পীড়িত, নির্যাতিত জাতি বুঝবে কি করে?
এরা শুধু ভাত চিনে, চাকরি চিনে।
'এদের জন্মই আজন্ম পাপ'- বলা দাউদ হায়দারকে তুমি নির্বাসনে পাঠিয়ে দিলে।
তোমার মহানুভবতা খালি চোখে অনুভব হবে না।
এরা বুঝে না।


হে সদা সর্ব অক্ষে চক্ষু ফেলা জাগ্রত রাষ্ট্র,
ওরা তলে তলে সংগঠিত হতে পারে, ফুলে ফেঁপে উঠতে পারে, ঘূর্ণিঝড় -জলোচ্ছাসের মত তোমাকেও ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে, ফেলতে পারে ইতিহাসের সোঁদা গন্ধ খাতায়, পঁচে যাওয়া কাগজের পাতায়, সুঁতো ছেঁড়া ঘুড়ির মত বটবৃক্ষের মাথায়।
কি করবে তখন? দেখি, শুনি!
ফুল ব্যবসায়ী মহারাষ্ট্ররাজ বলে, চীনের তিয়ানমেনে কি হয়েছিল? জানো?
ওই অস্বীকারকারী, বেইমান, কাফেরদের তারা ব্রাশফায়ার করে ওপারে পাঠিয়েছে।
১০ হাজার মেরেছে।
দেখেছো আজ চীন কোথায়? ট্রাম্পের সাথে টেক্কা মারে।


আহা! এমন যদি আগে বুঝতাম।


এখন আলবৎ বুঝেছি, হুজুর।
রাষ্ট্রের আইন  অনুযায়ী রাষ্ট্রদোহীতার অভিযোগে আপনি চাইলে আমাকেও ফাঁসি দিতে পারেন,
পারেন বন্দুকযুদ্ধে পিঠে গুলি করে রাস্তায় পাশে ফেলে রাখতে,
পারেন সাদা পোশাকে এসে কালো গাড়িতে করে নির্জন স্থানে নিয়ে লাল রঙে রাঙিয়ে ধূসরে পুঁতে রাখতে।
আমি কিচ্ছু বলব না।
কারন, আপনি আমাকে মেরুদণ্ড ভেঙেই ছেড়ে দিয়েছেন।
আপনার এই ঋণ আমি সারাজীবন ভিক্ষা করেও শোধ করতে পারবো না।