.     কাল রাতেতে, তাল তলাতে, ফেরার পথে দেখি,
      পাশের  পাড়ার  নব  খুড়ো, হাঁটছে  একা একি!
      ভর  গ্রীস্মে  চাদর  মুড়ি, খুড়োর  কেমন  সাজ,
      ঠান্ডা  লেগে  তার ওপরে  বদলানো  আওয়াজ।


      খুড়ো শুধোয় “ব্যাপার কিরে, হেথা রাত বিরেতে?”
      ক’লাম  খুড়োয়, পড়তে  গিয়ে   বিলম্ব  বৃষ্টিতে।
      বললে খুড়ো “দস্যি ছেলে, ভয় ডর  নাই প্রাণে?
      জানিস নাকি ভূতের প্রকোপ, প্রচন্ড এই  স্থানে?”


      “কিন্তু খুড়ো বলেন বাবা, ভূত  বলে কিছু নাই?”
      “বললে হলো, আয় তবে আজ ভূতকথা শোনাই।
      ভয়টা কিরে, আঁছি আমি, ঘেঁষবে  না ভূত কাছে,
      গল্প  কথায়  কাটবে  সময়  পৌছব গ্রাম মাঝে।


      ভূতের দলে  সব চে কুলীন, হলেন  ব্রহ্মদত্যি,
      পথের ওপর বেলগাছেতে, থাকেন বলছি সত্যি।
      পথিক পেলে  লম্বা  করে, মাথায়  ঠেকান পা,
      তাহার  পরে  নাকী  সুরে,  শুধান  সাকিন গাঁ।


      শেওড়া  গাছে  শাঁকচুন্নি  ঝগড়ালু  সে  ভারি,
      ভয় দেখানোয় সিদ্ধহস্ত, নইলে তো মুখ হাঁড়ি।
      মুলোর  মতন দন্তবাহার, কুলোর  মতন কান,
      নখ পাকিয়ে, খামচে দিয়ে, করবে খতম জান।


      মেছোভূত আর গেছোভূতের ভীষন রেষারেষি,
      শিরীষ ডালের দখলদারি, কেই বা নেবে বেশী।
      মেছোভূতের মাছের নেশা, কাউকে যদি পায়,
      মাছের সাথে, আঁধার রাতে, করুন সুরে চায়।


      গেছোভূতটি  গায়ক  বড়, আপন  মনেই গান,
      নিশুত   রাতে  গাছেতলাতে,  গর্দান  মটকান।
      স্কন্দকাটা বেজায় ঠ্যাটা, ভয় দেখানোর রাজা,
      মুণ্ডু ছাড়া ঘুরছে পাড়া, মানুষ পেলেই সাজা”।


      খুড়োর  কথা  এই না শুনে, ঘামছি  আমি  পুরো
      চেঁচিয়ে বলি, “লাগতেছে ভয়, থামবে তুমি খুড়ো?”
      ওই দুরেতে  হঠাত  দেখি মোদের ঘরের  আলো,
      খুড়োয় বলি, “শুনবো দিনে, লাগছিল বেশ ভালো”।


      কি আর করা, পাশের পাড়া, গেলুম পরের দিন,
      খবর  শুনে,  হলাম  আমি,  দিনেই  সংজ্ঞাহীন।
      আগের  দিনই  হার্ট  অ্যাটাকে, খুড়ো  পরপারে,
      গল্প  তবে  কে শোনাল, বোঝাও তো আমারে?