খাঁচার ফাঁক দিয়ে রোজই দেখি নীল আকাশটাকে,
বড়ো সাধ হয় ডানা মেলে উড়ে বেড়াতে।
ইচ্ছেটা হয়তো স্বপ্নই থেকে যাবে
বাস্তবে হয়তো আর কোনদিন ছাড়া পাবো না।
আবার পেলেও হয়তো সেটা জীবন সায়ান্হে পাবো
তখন আমার ডানার এতো জোরই থাকবে না,
বহুদিন আগে একবার খোলা আকাশে উড়ে ছিলাম ।
তখন একটু একটু করে বড় হচ্ছি,
নতুন উড়তে শিখে সে কি আনন্দ
যখন যেদিকে খুশি উড়ছিলাম।
বাবা, মা বারবার করে সেইদিকে যেতে নিষেধ করেছিলেন,
তবু অবঞ্জাভরে গিয়েছিলাম,
আর ধরা পড়লাম তোমাদের ফাঁদে
শূন্য হলো আমার বাবা মা এর কোল।
প্রথমে একটি ছোট্ট লোহার খাঁচা ছিল আমার আশ্রয়,
তারপর বেচলে আমাকে এক বাবুর কাছে।
বাবুটি আমাকে একটি সোনার খাঁচা বানিয়ে দিলো
এখন আমার কতো বৈভব
পরিচর্যার এতটুকু অভাব নেই।
দামী দামী সব খাবার আসে আমার জন্যে
সোনার খাঁচার চাকচিক্য অপরিসীম।
যে অতিথি এই বাড়িতে আসে-
সেই আমার খাঁচার প্রশংসা না করে যায় না।
বাবুটি আমার গলাতেও-
আবার একটি হীরের হার পড়িয়ে দিয়েছে।
এতকিছুর পরও আমি কিন্তু পোষ মানিনী
তারজন্য বাবুটির আক্ষেপের শেষ নেই।।
যখন বাবা মায়ের সাথে ছিলাম,
তখন আমার খাদ্যের পরিমাণ ছিল অনেক কম ।
কোন কোন দিন খাবারই জুটতো না।
কিন্তু আমার একটা বিরাট খোলা আকাশ ছিল,
ছিল প্রানভরা মিষ্টি বাতাস,
ছিল যেখানে সেখানে যাওয়ার স্বাধীনতা।
আর খাঁচার মধ্যে আকাশটাও যেন বন্দি,
গুমোট বাতাসে দমবন্ধ হয়ে আসে।
এই ভরা যৌবনে পূর্বরাগের আনন্দটাই মাটি হয়ে গেলো
হে পরমেশ্বর, কোথায় তোমার পাপ পুণ্যের মানদণ্ড?
যদি তুমি সত্যিই থাকো,
তাহলে বলো কি অপরাধে আমি বিচ্ছিন্ন?
চাইনা এই বৈভব, শুধু চাই একমুঠো খোলা আকাশ
পেতে চাই মুক্তির আনন্দ ।।