আজ আর বিদ্যালয়ের গালি-বারান্দার
আনাচে কানাচে বন্ধুর দল
রেলিং এ ঝুলে ঝুলে থাকে না।
বয়সের আঁচরে ক্ষতবিক্ষত করা
ভগ্ন ইঁটের ফাঁকে ফাঁকে পড়ে আছে
শুধু এক বুক দীর্ঘ নিঃশ্বাস।

বিদির্ন সিলিং এ এখন শুধু
পাখি আর পায়রার বাস।
জানালার ফাঁকা কাঁচ ভেদ করে
ছিটকিনিগুলো বিবর্ন প্রায়।
ব্ল্যাক বোর্ডগুলো ছত্রাকের আবর্তে
স্যাতস্যাতে গন্ধে নির্বাক ।

বেঞ্চ-ডেক্সের ফাঁকে ফাঁকে টুকরো পেন্সিল
আর কাগজের সোদা সোদা গন্ধ।
ধুলো বালি জমা মেঝেতে নেংটি ইঁদুর
আর আরশোলাদের অবাধ আনাগোনায়
ফেলে আসা মুখরিত দিনগুলো যেন
আজ বিমর্ষ বেদনার এক দলিল।

ভাঙ্গা দেওয়ালের ফাঁক দিয়ে
ঐ কৃষ্ণচূড়ার ঝিরিঝিরি পাতার
মর্মর ধ্বনিতে সূর্যাস্তের লাল আভায়
আজ প্রান উদ্বেল করার ক্ষনগুলো
কেমন যেন  নিষ্প্রভ নিষ্প্রাণ ।

ক্লাস রূমের বিবর্ণ দেওয়ালে
আজ মাকড়শাদের অভেদ আনাগোনা।
মধ্যাহ্ন ভোজনে উজ্জ্বল উপস্থিতির
কলকাকলি আর ব্যস্ততার মুহূর্তগুলো
অজান্তেই কোথায় যেন থমকে গেছে।

ইস্কুলের দাদামনির সেই পিতলের ঘণ্টার
সুমধুর আওয়াজ আর স্যার মেডামের
গুরুগম্ভীর জ্ঞানে আবরিত সেই মুহূর্তগুলো
আজ শুধুই অতীত।
  
অতিমারীর এই যুদ্ধ জয়,আর তমসার
অন্ধকার ভেদে কবে ফিরে আসবে
আবার কলোকাকলীতে ভরা সেই
আনন্দঘন উদ্বেলিত মুহূর্তগুলো?


একরাশ বুকভরা অপেক্ষায় দিবারাত্রি
বিদ্যালয়ের লৌহ কপাট স্থির দাঁড়িয়ে....
কবে খুলবে জ্ঞান মন্দিরের দ্বার!
কবে ফিরে আসবে সেই প্রানউচ্ছল
একঝাক শিশুদের কণ্ঠে গুঞ্জরিত
মিষ্টি কোলাহলে বিদ্যালয়ের সেই মধুরিমা.....?