একটি শব্দ আমরা প্রায় সকলেই জানি
‘অন্ধ প্রেম’


মানুষ প্রেম করে, প্রেমে পড়ে
‘তাহলে অন্ধ হয়ে প্রেম করে
প্রেম কিছুই দেখতে পায়না?’
এমন অনেক প্রশ্ন জাগতো আমার মনে।
আমি এর মানে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
বয়সটা কত হবে, আঠারো ছুঁই ছুঁই।
আঠারোর বসন্তটাই আমার হৃদয়ের
প্রেম বসন্ত হয়ে নাড়া দিল।


কেন যেন চলার পথ শূন্য মনে হতো
কিসের যেন অভাব সবসময়
মনের পড়ে অনুভব হতো
বুঝতে পারছিলামনা কিছুতেই।
  
এমনি আশার দিনে
স্বপ্নচারীতার স্বপ্ন রাজকন্যা এসে
ধরা দিলো আমার মাঝে।


রাতটি ছিল সেই বসন্তের জোনাক ভরা
চাঁদনী রাত।
মনের শূন্যতা পূরণ করার জন্য
স্বপ্নরাগীনীর আগমন।
ভালো কাটতেই শুরু করলো সময়টা
দিনভর, রাতভর, অন্ধ মন, অন্ধ ভালোবাসা
শুধু স্বপ্নবতীর প্রেমের বন্ধনেই অটুট।


স্বপ্নবীনী আমাকে ভালবাসতে শিখাতে শুরু করল
আমিও কেন জানি অন্ধের মত হয়ে
শিখতে শুরু করলাম ভালবাসার বর্ণমালা
বর্ণমালা দিয়ে আবার তৈরি হতে শুরু হলো
ছন্দ, গান, কবিতা।
আঠারোর বসন্তের কুকিলটা ছিল
আমার গানের সুর সঙ্গী,
সুর দিত নিয়মিত।

বসন্তের ভ্রমরার গুনগুনানী ছিল
আমার মনের বেহালা।
বসন্ত বাতাসটা প্রেমী মনের উদ্ধীপনা
প্রতিটি ছোঁয়াই  ছিল
ভালবাসার পথপানে একধাপ আগানো।


স্বপ্নবীনীর মায়াজালে আমি ছিলাম অন্তসাড়শুন্য
কিছুই যেন আমার বুঝে ওঠার ক্ষমতা ছিলনা
হঠাৎ সেই বসন্ত  পাখিটার সুর
দিন দিন পাল্টাতে শুরু করল
পরিবর্তন  দেখা দিল তার গানের কথায়
আমি গাঁথতাম গান এক ছন্দে
পাখিটা গাইতো আরেক ছন্দে।


একটি শব্দই পাখিটা বেশী গাইতো
‘বিধায়’
আমি বুঝে উঠতে পারলাম না ‘বিধায়’ শব্দটির মানে
ভেবে নিতাম হয়তো প্রকৃতির বসন্তটার  বিধায়।
সময়ের পরিবর্তনে বসন্ত
ঠিকই বিধায় নিল রীতিমত
সেই সাথে কি যেন বিধায় নিল আমার থেকেও।


হঠাৎ বয়ে গেল আমার মাঝে
কালবৈশাখি ঝড়
টুকরো টুকরো করে দিল
আমার স্বপ্নে রাঙানো ঘরটুকু।


আবাস হল আমার একাকিত্বে আর শূন্যতায়
হৃদয় আকাশে সঙ্গী হল কাল মেঘ
রীতি মত মেঘাচ্ছন্ন মনের নীলিমা
কখনো কখনো আবার বাঁজ পরে মনের মাঝে।


এত সবের মাঝেও অপেক্ষায় থাকতাম
ফিরে বুঝি আসবে আবার বসন্ত
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে বসন্ত ঠিকই আসে যায়
ফিরে আসেনা বসন্তের গান।
অন্ধ ভালবাসা বুঝতে পারেনি বিধায় শব্দটাও
আজও শুধু বেঁচে আছি অন্ধ ভালবাসায়
অন্ধ আশায়, থাকব পরে।