চর্যা ১,  মূল- লুই।
আধুনিক কবিতা রূপ
  
আজাদ বঙ্গবাসী
    
এদেহ যদি গাছ ভাবি পাঁচটি তার ডাল
যে ডাল ধরে উথলি মনে প্রবেশ করে কাল।
মহাসুখ কিসে হয় জানতে যদি চাও।
লুই বলে, আগে গুরুর ছায়াতলে যাও।
সুখের পিছনে ছুটে গড় কত কি মরণ নিশ্চিত, তবে কেন রঙিন পৃথিবী?
কু-ইন্দ্র, লোভ, মোহ এসব তোমার না
পেতে যদি চাও- মানুষ জনম-তা।
তাই ত বলে ধ্যন্থ লুই
বস্তুজগত ছেড়ে আমি- শূন্যতাকে ছুই।
    


।।



চর্যা ১ মূল: লুই,


আধুনিক গদ্য রূপ:
আজাদ বঙ্গবাসী


দেহকে যদি একটি বৃক্ষের
সাথে তুলনা করা হয় তবে তার পাঁচটি ডাল
রয়েছে।(দেহের পঞ্চডাল: চোখ, কান,
জিহ্বা,ঘাণ ও ত্বক) এর যে কোন
একটি ব্যধিগ্রস্থ হলে দেহে কাল(ধ্বংস)
প্রবেশ করে। মনকে স্থির করে সুখের
পরিমাপ করেনাও।তাই কবি বলে, এজন্য গুরুর
কাছে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। (নিজেক
জিজ্ঞাসা) মন, সব মানুষেরই কেন
সমাধি হয়? (তৃতীয় মনের উত্তর) সুখ
দুখে সবাইকে মরতে হবে এটাই মহাসত্য।
সবকিছু শূন্য বিলিন হয়। অতএব, নিজেকেও
শূন্য পক্ষেই বিড়াও। লুই বলে, আমি যখন
ধ্যান করি আমার শ্বাস প্রশ্বাস
এবংকি সমস্ত অস্তিত্বই মহাশূন্যতার
সাথে মিশে যায়।



।।


চর্যাপদ সংক্ষিপ্ত আলোচনা:


চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন।
অনুমান করা হয় সংস্কৃত ভাষার এই
কবিতাগুলো ৬৫০ খ্রি. রচিত।
মহামোহপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, ১৯০৭
সালে নেপালের রাজগ্রন্থাগার
থেকে আবিষ্কার করেন। "
চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চ " থেকে তিনি এর নাম
দেন চর্যাপদ। ১৯১৬ বঙগীয় সাহিত্য পরিষৎ
থকে প্রাচীন পুঁথিটি "হাজার বছরের পুরাণ
বাঙগলা ভাষার বৌদ্ধ গান ও দোহা "
নামে প্রকাশ করা হয়।
সাড়ে ছেচল্লিশটি পদের ২৪ জন পদ কর্তার
পরিচয় পাওয়া যায়।



।।


মূল কবিতা:
( মূল কবিতা এজন্যই নিচে দিলাম যাতে কেউ সংস্কৃত ভাষা দুরহ এই কবিতা পড়েই অর্থ পড়া থেকে পিছপা না হন)
চর্যা ১
লুই রাগ: পটমঞ্জরী


কাআ তরুবর পাঞচ বি ডাল।
চঞচ চীএ পইঠা কাল।।
দিঢ় করিঅ মহাসুহ পরিমাণ।
লুই ভণই গুরু পূছিঅ জাণ।।
সঅল সমাহিঅ কাহি করিঅই।
সুখ দুখেতে নিচিত মরিঅই।।
এড়িঅউ ছান্দ বান্ধ করণ কপটের আস। সূনু পাখ ভিড়ি লাহুরে পাস।।
ভণই লূই আম্ হে ঝাণে দীঠা।
ধমন চবণ বেণী পিণ্ডি বইঠা।।"