দূর থেকে দেখা সেই নারীঃ
প্রাচীন দ্রাবিড়ের অবাক বিস্ময় নিয়ে, অবিশুদ্ধ এক গঙ্গার ধারে, যেন কৃষ্ণা... এক দ্রৌপদি,
পুরুষের স্বপ্ন, কামনা, আর লোভ জড়িয়ে পথহারা সে, এক... পদ্মীনী মানবী!
চোখে তার কাঞ্ছঞ্জংঘায়-কুয়াশা... রহস্যময়, অচিন, অদেখা কবিতা,
মুখে তার হিমালয় থেকে ভেসে আসা শৈত্যপ্রবাহের...নিস্তব্ধ, করুন বিষন্নতা।


প্রতিক্ষায় সে থাকে... এক সাঁওতালি পুরুষের জন্য
বুকে যার কর্ষিত মাটির গন্ধ, আর শরীরের ভিতরটা হবে যার...দ্রাবিড় রক্তে ধন্য।


পাঞ্ছালা থেকে বয়ে যাওয়া যে বাতাস পৃথিবী ঘুরে এসে আজ ছুঁয়ে যায় তাকে,
সে বাতাস যখন নিয়ে আসে কৃষ্ণার নীলপদ্ম-গন্ধ আমার কাছে,
ইচ্ছে করে ছুটে যাই, ছুঁই তাকে, আর উজার করে দেই...যা কিছু আমার আছে!
পরাবাস্তব সেই অপার্থিব ভুবনে, নিজের করে রাখি যাকে,
সে নারী আমার নয়, আমিতো সেটা জানি।
তবু, কেনো স্বপ্নবিহারে, বারবার ছুঁয়ে যাই তার...মায়াবী, দ্রৌপদি মুখখানি!


তিল থেকে তিলে তার... স্বপ্নপুরির আহ্বান!
নিঃশ্বাসে, দোচোয়ানি স্বাদের, মহুয়া এক...মাতাল ঘ্রান!
মুখে তার "কবেকার সর্বনাশা...বিদিশার নেশা"!
দাঁতের ঝিলিকে, পীর পাঞ্জলের চুড়া থেকে নেমে আসা কাশ্মির- সূর্যের... মসৃণ উষ্ণতা!
যে নারী অন্যের, তার ঠোঁটে কি করে পাই আমি...বিম্বাশার স্বাদ!
শরীরী আভায়, কল্পনায়, কেমন করে সে পেতে রাখে...অমন মরণফাঁদ?


কোমল-গান্ধার মতো নরম স্তনে, আমার স্বপ্ন-জ্যোৎস্নারা... খেলা করে,
বিস্তীর্ণ উপত্যকার গড়ানো ঢালে, আমার স্বপ্ন-আঙ্গুলের সব জোনাকিরা... ঝরে ঝরে পরে।
পদ্মিনী সে নারীর দৃষ্টিতে দেখে...অতলান্তের আহব্বান,
মরুভূমি হয়ে উঠে তৃষ্ণা আমার, যার কাছে...সব কালপুরুষের, তৃষ্ণাও হবে ম্লান।  


ঐ নারী আমার নয়,
তবু মাঝে মাঝে, মতিভ্রমে কি... আমি দেখিঃ সে ও আমায় দেখে!
গঙ্গা-কিনারে বসে বহু পুরুষের লোভে সিক্ত হয়েও, সে কি তবে আমারই অপেক্ষায় থাকে?
...


প্রাচীন দ্রাবিড় আমি, আছে আমারও শরীরেঃ সাঁওতালী পুরুষের রক্ত
বিপন্ন সে নারীর ভালবাসা পাওয়ার আশায়, রেখেছি আমার সব দ্বার আজ উন্মুক্ত।


জানি, সে আমার নয়, হবেও না কোনদিন।
তবু, আমার দ্রাবিড়-স্বপ্নে, কেনো তাকে দেখা দিতে হবে... প্রতিটা দিন!


জানি, ঐ নারী অন্য কারো।
এবং, তাকে না পাওয়ার বেদনায় কাঁটিয়ে দিতে হবে... এক অতৃপ্ত জীবন!
তবু কেনো
বুকের মধ্যে তার জন্যে, ক্রমাগত চলে...আমার নিরন্তর ক্ষরন!