সবকিছু ভেঙে ফেলার পর, এক সময় বুঝেছিলাম—
শূন্যতা চিরকাল থাকে না।
ছাইয়ের নিচ থেকেও একদিন ছোট্ট সবুজ অঙ্কুর বেরিয়ে আসে।
যারা লড়াই করে প্রাণ দিয়েছিল, আমি তাদের নাম ভুলিনি।
না, সেটা কোনো আবেগে নয়—ভালোবাসা বা ঘৃণায় নয়।
আমি শুধু বুঝেছি,
মৃত্যুরও একটা ভাষা আছে,
আর ভাষা মানেই দায়িত্ব।
আজ আমি ভিন্নভাবে ভাবতে শিখেছি।
বিপ্লব মানে শুধু আগুন লাগানো নয়—
বিপ্লব মানে হলো,
ছায়ায় দাঁড়ানো একটা শিশুর চোখে চোখ রেখে বলা,
"তুমি ভয় পেয়ো না, আমি আছি।
এই পৃথিবী তোমার জন্যও হতে পারে নিরাপদ।"
এই বিশ্বাস গড়ার জন্য আমি ফিরে এসেছি।
এবার আমার হাতে কোনো ফাঁসির দড়ি নেই।
আমি গড়ছি একটা বিদ্যালয়,
যেখানে শেখানো হবে প্রশ্ন করতে,
যেখানে ভালোবাসা ঈশ্বরের জন্য নয়—মানুষের জন্য হবে।
প্রেম নয়, সম্মানের খোঁজে মানুষ শিখবে দাঁড়াতে।
এখানে যুক্তি হবে অনুভবের ভিত্তি।
আমি চাই এমন এক সমাজ গড়ে তুলতে—
যেখানে কেউ রাজা নয়, কেউ প্রজা নয়,
সবাই প্রশ্ন করে, উত্তর খোঁজে,
এবং সিদ্ধান্ত নেয় একসঙ্গে।
আমি খুঁজছি এমন প্রেমিকাদের,
যাদের হাতে শিকল নয়,
আছে কলম, আত্মপরিচয়, এবং প্রতিবাদ করার সাহস।
তারা আসবে—
ধ্বংসের ধুলো ঝেড়ে,
নিয়ে আসবে নতুন এক ভাষা,
যেখানে ‘ভালোবাসি’ মানে হবে—
“আমি চাই তুমি স্বাধীন থাকো।”
আমি আর কোনো নতুন ঈশ্বর বানাতে চাই না।
বরং আমি ঈশ্বরকে শূন্য করছি,
তার জায়গায় আনছি—
আমার চারপাশের মানুষদের—
শিশু, মেয়ে, কবি, কৃষক, প্রতিবেশী।
এখন ঈশ্বর মানেই মানুষ।
না, আমি দুর্বল হইনি।
আমি শুধু বুঝেছি,
বিপ্লব আগুনে শেষ হয় না—
বিপ্লব তখনই শেষ হয়,
যখন মানুষ সত্যিকার অর্থে মানুষ হয়ে ওঠে।
আর সেই মানুষ গড়ার কাজ শুরু করেছি নিজের ভেতর থেকেই।