"জাগরণে আমি অগ্নিসন্ধান"

(“আমার অক্ষয় পথের পরিভ্রমণ” এর দ্বিতীয় কবিতা)

আমার যাত্রা থেমে নেই,
আমি অন্ধকারে আলো খুঁজি না—
বরং অন্ধকারকে আলোতে রূপান্তর করি
জীবনের প্রতিটি অনিশ্চিত বাঁকে
আমি নিজেকেই জ্বালিয়ে নিই,
আমার প্রশ্নগুলো ছায়া ফেলে দেয় সমাজের চৌকাঠে
যেখানে নৈঃশব্দ্য মুখোশ পরে আছে
আলোচনার নামে আদেশ,
আত্মিকতার নামে আনুগত্য।

আমি এখন শিখেছি
ভালোবাসা কেবল আবেগ নয়—
এটা এক ধরণের সিদ্ধান্ত,
নিজের অভ্যন্তরে সৃষ্ট নৈরাজ্যের
এক শৃঙ্খলা আরোপ।
আমি প্রেমের কাছে হাত পাতিনি,
বরং তার সম্মুখে দাঁড়িয়েছি—
এক যোদ্ধা হয়ে, নিজের বেদনার অস্ত্র হাতে।

যারা শৃঙ্খলা নামক শব্দে সুখ খোঁজে
তারা কখনোই জেনেছে না স্বাধীনতা কেমন লাগে
আমার হৃদয় ফুঁড়ে উঠেছে
যে সত্যের কাছে আমি একদিন আত্মসমর্পণ করেছিলাম
সে সত্য আজ ছদ্মবেশে শাসন করে
জ্ঞানচর্চা নয়, জ্ঞান-বাণিজ্য হয়েছে এর ধর্ম
আর তর্ক নয়, এখন শুধু স্বীকৃতি চায় এ সমাজ।

আমি প্রতিবাদে উচ্চারণ করি—
“আমি কিছু মানি না, তবু আমি সব বুঝি”
কারণ, মানা মানেই যে মেনে নেওয়া নয়
আর বোঝা মানেই যে অনুসরণ নয়।
আমি নিজেই আমার নিয়ম,
নিজেই আমার আদালত, বিচারক এবং সাক্ষ্য।
যদি সমাজ একদিন আমাকে পাগল বলে,
আমি হাসবো, কারণ তারা নিজেই ভুলে গেছে—
পাগলরাই তো কালে কালে ঈশ্বরের মতো সত্য বলে ফেলে!

এখন আমি ভোরের আগের নিস্তব্ধতায় দাঁড়াই
যেখানে আলোর আগমনী ঘণ্টাধ্বনি বাজে না—
শুধু আত্মার এক গম্ভীর কণ্ঠ বলে উঠে:
“তুমি এখন নিজের পথপ্রদর্শক,
তোমার যাত্রা অক্ষয়, কারণ তুমিই সেই অগ্নি
যার দীপ্তিতে সমাজ একদিন স্বপ্ন দেখবে
এবং তুমি একদিন খুঁজে পাবে
আত্মার সেই সত্য,
যা পরিভ্রমণের থেকেও বিশুদ্ধ।”