“আমি আমার উত্তর হতে চাই”
(“আমার অক্ষয় পথের পরিভ্রমণ” ধারার তৃতীয় কবিতা)
আমি আর প্রশ্ন নই,
আমি এখন উত্তর হতে চাই—
নিজের প্রশ্নের, নিজের সংকটের,
নিজেরই বেদনাবিদ্ধ অভিযানের
এক দৃঢ়, নির্ভীক উত্তর।
আমি বুঝেছি,
সব প্রশ্নের উত্তর বইয়ে থাকে না,
থাকে না সমাজের মুখস্থ শ্লোকে,
থাকে আমার ভাঙা ঘুমে,
রাতের তিনটায় জেগে ওঠা কান্নায়,
একাকিত্বের ভেতর বুক চিরে বের হওয়া
নিরব আলোড়নে।
তারা বলেছিল,
জীবন মানে নিয়মের ভিতর থাকা,
কিন্তু আমি দেখেছি
জীবন অনেকটা পাথরের মতো—
যার ভিতরেও আগুন থাকে,
যদি তুমি ঠুকে দেখো, যদি তুমি পুড়তে পারো।
আমি সমাজের আয়নায় নিজেকে খুঁজি না,
সে আয়নাগুলো কুয়াশায় ঢেকে গেছে বহু আগে,
আমি এখন আত্মা দিয়ে দেখি—
যে দৃষ্টির সামনে চোখ খোলাও এক ধরণের অন্ধত্ব।
আমি আমার চোখ বন্ধ করে উপলব্ধি করি
এক বিস্ময়কর জ্যোতি,
যা আমার অন্তর্গত ছিল শুরু থেকেই।
আমি আর অপেক্ষা করি না
ঈশ্বর কিংবা নিয়তির হাত ধরে আসা মুক্তির,
আমি নিজেই এক মুক্তির নির্মাতা—
যে নিজের কাঁধে সত্যের পাথর তুলে নেয়
তাকে কেউ বন্ধন দিতে পারে না
কারণ সে নিজের চেতনার দায় স্বীকার করে।
আমার রক্তে এখন ভাষা নেই,
আছে একটি ধ্বনি—
যা জ্বলে ওঠে নীরবতার ভিতর,
আর সেই ধ্বনি বলে:
"তুমি কারো উত্তর খুঁজো না,
তুমি নিজেই হও এক উত্তরের নাম—
এক অক্ষয় সম্ভাবনা,
যার দিকে ঝুঁকে আসে ভবিষ্যতের জন্মশব্দ।"