হাসপাতালে বসে আছি
পেটে প্রচন্ড ক্ষিধে
নব জাতক শিশু হয়েছে কেবল
বিছানার উপরে বউটা শুয়ে আছে
সেলাইন চলছে, তাই তার ক্ষিধে নেই
বাচ্চাটা কিছুক্ষণ পর পর ওয়াও ওয়াও করে কেঁদে উঠে
মানে তারও ক্ষিধে লেগেছে
তখন মনে পড়লো ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
শাশুরীর মুখেও ক্ষুধার ছাপ
তাই আর দেরি না করে নিচে নেমে এলাম
তখন রুটি বানাচ্ছিল কারিগর
যত আয়োজন তার পেট এবং অন্যের পেট চালানোর জন্য
রুটি নিয়ে যখন হাসপাতালে এলাম
ছোট গিন্নির সুন্দর হাসিতে বুঝা গেল তারও ক্ষিধে লেগেছে


আমি এখন চায়ের দোকানে
নেশা করতে এসেছি
এ এক অদ্ভুত নেশা
লোকে বলে চা না খেলে কী হয় ?
ঐ যে ব্রেণের ক্ষিধে
রক্ত শিরা-উপশিরার ক্ষিধে
সে বসে থাকে শান্তি পেতে ৷
হঠাত চোখ পড়লো এক মধ্য বয়সী মহিলার দিকে
হাতে অর্ধেক রুটির অংশ বিশেষ
দুই পাশে দুটি কচি মুখ
জোড় করেও খাওয়াতে পারছে তাদের মা
আমার চোখে চোখ পড়তেই মহিলা বলল
এই ছেলেদের নিয়ে কষ্টে আছি
কথাটা বলেই আবার বিফল খাওনোর চেষ্টা
আমি বললাম- তোমরা কী খাবে বাবা ?
অলটাইমের দশ টাকা দামের দুটি পাউরুটি দেখালো
আমি দুজনের হাতে দিলাম
কী সুন্দর সেই পাউরুটি আমার সামনে খেলো
ভাবলাম আমার সন্তানরাও তো এখানে থাকতে পারতো
মহিলাকে একশত টাকা দিয়ে ওদের আরো কিছু কিনে দিবেন বলে চলে এলাম ৷
সকলের ক্ষিধে লাগে
কেউ সহজে পেয়ে যায় ক্ষুধা মিটাবার খাদ্য
কেউ অর্ধেক রুটি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়
কেউ দেখে কেউ দেখেও না
এভাবে চলে যায় স্বাধীন দেশের বাস্তবতা ৷