যখন ছিলাম ছোট, তখন থাকতাম হয়তোবা মাতৃকোলে শুয়ে,
খেলতাম আপন মনে, হয়তোবা নিজেকে নিয়ে,
নতুবা কোন স্বপ্ন খেলাই থাকতাম মেতে ,
ছোট বেলার কথা কিছু আসে না স্বরনে ।
হয়তোবা, বিভোর থাকতাম মাতৃদুগ্ধ পানে,
কত খেলা, কত অভিমান করতাম মা-ছেলে দু’জনে ।



কত আদর, কত ভালোবাসা দিয়েছিলে, পড়ে না মনে,
কত রাত কাঁটাইছো জেগে আসেনা স্বরনে ।
আজ শুধু মনে পড়ে, তোমার হাসিমাখা মুখখানি,
আদেশ,উপদেশের সেই বড় বড় সোহাগের বাণী ।
মনে পড়ে মা, তুমি অন্যায় পেলে,
রাগান্বিত্ব স্বরে শাসনের বাণী দিতে ছুড়ে ।



আজ ঘরের ধুসর পোড়া মাটি, টিন, সব যেন গেছে মরিচা পড়ে,
তবুও তোমাকে রেখেছে স্মরনে ।
শুধু আমারই মন থেকে গেছো মুছে,
আজ যা-কিছু মনে পড়ে সব পত্রের ছলে ।


জানিনা ”মা” তুমি কত রজনী জেগেছো করুন দুঃখে,
আশাভরা নয়নে চেয়েছো আমার মলিন মুখে ।
তোমার কষ্টের জীবনে, আমি পারিনি আনিতে একটু সুখ ধরে ।
আজ এই মাটি পোড়া ঘর,
আর বিভিন্ন ঘর সাজাবার যন্ত্র,
সব কিছুতেই লেগে আছে তোমার স্পর্শ ।
তাইতো, তোমার অবর্তমানে মনে হয়,
এগুলো তোমারই রেখে যাওয়া পত্র ।
যত দেখি তত মনে পড়ে,
মনে পড়ে ’মা’ অসুস্থতায় তুমি করতে আদর,
তুমি ছিলে আমার কষ্ট ভোলাবার পরশ পাথর ।
কেমনে কাটাবো বল ‘মা’ তুমি বিনে এ প্রহর ।



তোমার কথা মনে পড়তেই জলে ভেসে যায় বুকের পাঁজর ।
এই বদ্ধ বাতাসে একলা ঘরে মন কেঁদে যায়,
চারিপাশে অনেক মানুষ, তবুও মনে হয় কেউ নাই ।
শুধু ধুসর দেয়ালের আড়াল থেকে তোমার ডাক শুনতে পাই ।
তুমি যেন বলছো, কোথায় খোকা ?
এতদিন কোথায় ছিলি ? আয় বুকে আয় ।
যাদের কাছে ’মা’ আছে তারাই এই আদর পাই,
আর আমি পড়ে থাকি মহা-মায়ার ছলনায় ।
আমি নেই এই ধরায় আগের মত,
আঁখি জল পারে না ভোলাতে তোমার স্মৃতি যত ।



এ ভাবেই হয়তোবা হয়ে যাবে পার,
জীবনে বাকি আছে আর যত প্রহর ।
শুধু পৃথিবীর কাছে একটাই মিনতি এখন,
আমার মায়ের হাতের এই ঘর সাজানোর যন্ত্র রাখিও যতন ।