যখনই হেঁটে যাই উত্তর কলকাতার গলি বেয়ে,
চোখটা ঘোরাই আশেপাশের বাড়ির দিকে;
কী সুন্দর সব বারান্দা ঝোলে এক-একটা বাড়ির গলায়!
কোনোটা বেশ চকচকে,কোনোটা একটু ভাঙা;
কোনোটা বেশ মোটাসোটা, কোনোটা একটু প্যাঙা।
হিংসে হয়, ইচ্ছে হয়, চুরি করে নিই শুধু একটা,
কী-ই বা ক্ষতি ওদের হবে, কতই তো আছে ওদের।
আহা কত কী দেখে ওরা ওই বারান্দা দিয়ে,
ঠাকুর ভাসান, ভোটের মিছিল, মরদেহ যাওয়া...
শীতে বুঝি ওখানেই সারে সবাই, দুপুর বেলার খাওয়া ?
ইস ! আমারও চাই, একটামাত্র ঝলমলে বারান্দা।
আমিও দেখব ওখানে দাঁড়িয়ে, চড়ুই পাখির বিয়ে,
শালিক বৌ-এর ঝগড়া, কাঠবেড়ালিদের পরকীয়া...
জামাইষষ্ঠী করব পালন, বেড়ালগুলোর সঙ্গে;
বর্ষায় জল মাখব দু-হাত দিয়ে,আমার সারা অঙ্গে।
শরতকালে সারা বারান্দায় হবে কাশফুলের হাট,
দুগগা ঠাকুরও কিছু কিনে নিয়ে যাবে কৈলাস যাবার সময়।
হেমন্তের অচেনা দিন আমায় ধুয়ে কনে দেখা আলোয়,
শীতকালে গায়ে দাদুর শাল দিয়ে সঞ্চয়িতা পড়ব...
বড়োদিন আসার আগে ওইখানেই যীশুকে গড়ব।
ঋতুর পরে ঋতু খেলে যাবে আমার বারান্দা দিয়ে
বৃদ্ধ আমি ওইখানেই থাকব বসে,সঙ্গে শুধু স্মৃতি নিয়ে।।