জ্বলন্ত দুপুরে চারটে লোক বয়ে নিয়ে যাচ্ছে পালকি...
গরম বালিতে ঘামের বাষ্প জমে ওঠে একফোঁটা দু-ফোঁটা।
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে থাকি পালকির ভিতরে,
দুই হাঁটুর মাঝে থুতনি রেখে বসে আছ তুমি।
পালকির দুলকি চাল থেকে থেকেই করে তোলে অস্থির;
শুধু তোমার দৃষ্টিটা স্থির... মাটির ওপরে নিমজ্জিত।
আমি হাত নেড়ে ইশারা করি, গলা ফাটিয়েও ডাকি-
ওই-ই।
তুমি দেখতে পাবে বলে তোমার দেওয়া সেই রুমাল ওড়াই...
পালকি কেবলই এগিয়ে চলে পশ্চিম থেকে আরো পশ্চিমে।
আমি ছুটে যেতে চাই তোমার কাছে, কিন্তু কী করে যাই !
সামনে যে খরস্রোতা এক খাল বয়ে যায় মৃত্যুর পাশা খেলে।
কিন্তু এইখানে এই খাল এলো কোত্থেকে... নিয়তি তুমি জান ?
মনে পড়ে যায়, একদিন তো তুমি-আমি মিলেই আনমনে,
কেটে ফেলেছি নিজেদের মধ্যেকার এই খাল...
আজ যার একপারে তুমি, অন্য পারে আমি।
আমাদের মতো, অজস্র ভেসে যাওয়া নৌকার মাঝিদের
চোখের জলে দিনের পর দিন এই খাল হয়েছে স্বয়ংসম্পূর্ণা।
আজ যার ওই পার দিয়ে বয়ে চলেছে তোমার পালকি
পশ্চিম থেকে আরো পশ্চিমে, ভিতরে তুমি, একদম একা...


                ।। সমাপ্ত ।।