প্রিয় ভাবমূর্তি!
                   তোর এত দাম এত মুল্য, আগে তা জানতাম না! তোকে কিনতে হলে  অসংখ্য জীবনের দাম দিয়ে কিনতে হয় সেটাও জানতাম না, তোর এত দাম! রক্ত দিয়েই যদি কিনতে হয় তোকে, তাহলে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা আবার কিনলাম কেন? তোকে কিনতে গিয়ে আজ দেখ কত মায়ের চোখে  অশ্রু ঝরছে। তোকে না কিনলে হয়ত বেঁচে যেত সেই মেয়েটি যার টাকায় কিনা বাবার ঔষুধ মায়ের খাবার ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চলত, হয়ত বেঁচে যেত অনেক তাজা প্রাণ, যারা ক'দিন আগেও শক্ত হাতে সুতোর মেশিন ঘুড়িয়ে দেশের অর্থনীতি নামক অদৃশ্য চাকাটি ঠিক রাখতে অবদান রেখেছিল, কিন্তু দেখ আজ অর্থনীতি নামক সোনার হরিণের সুফল তারা পায় নি। দেখ আজ তারা দুর্গন্ধময় পচা লাশে পরিণত হয়েছে।
শুধু তোর জন্য রে ভাবমূর্তি শুধু তোর জন্য আমাদের বাঘা রাষ্ট্র পরিচালকেরা ওদের সহযোগিতার হাতকে ফিরিয়ে দিয়েছে।
প্রতিদিন যখন কোন না কোন  মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয় তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, মন্ত্রী নামক থলের বিড়াল যখন চুরি করে ধরা পড়ে তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, যখন মন্ত্রীরা বেফাঁস কথা বলে  সারা বিশ্বে বিনোদনের পাত্র হয় তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, ঘুষ ছাড়া যখন কোন কাজ হয় না সারা বিশ্ব যখন মুখ ফিরিয়ে নেয় দুর্নীতি আর ঘুষের জন্য তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, ফেলানীর লাশ যখন ঝুলে থাকে সীমান্তের কাটাতারে তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, লক্ষ লক্ষ মেধাবী যখন বেকার বসে থাকে অথচ ধোকাবাজ মন্ত্রীরা দলীয় চোরের চাকুরী দেবার  কথা বলে তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, অস্ত্রের হাতে জিম্মি অসহায় মানুষ যখন বিচার পায় না তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে বিশ্বজিতকে দিনে দুপুরে সরকার দলের কুলাঙ্গারেরা যখন কুপিয়ে হত্যা করে তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি।
মৃত্যুর দারপ্রান্তে দাড়িয়ে যখন বলে '' ভাই আমি হিন্দু, আমি কোন রাজনীতি করি না, আমাকে ছাইড়া দেন'' তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি!


আজ যখন অন্যদেশ আমার ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসতে  চায়, রক্তে যখন সমস্ত শরীর বীভৎস হয়ে পড়ে থাকা ভাইয়ের বোনের লাশের গন্ধ বাতাশ ভারী করে তোলে, দু'চোখের ঘুম কেড়ে নেয় তখন কই যায় দেশের ভাবমূর্তি, তখন কি দেশের ভাবমূর্তি  নষ্ট হয় না...............!


হায়রে ভাবমূর্তি তোর এত দাম রাষ্ট্র নামক রক্ত চক্ষু তোকে এত দামে কিনে নিল!