এসো বৃষ্টিকে ছুঁয়ে দিব আজ,
এসো অশ্বারোহীরা ফিরে এসো আবার!
সে দূরের বারান্দায় আনমনে জল গোণে,
সাথী হয়ে বসে কাঁদে কয়েকটা ক্যাকটাস!
আমি এই জানালায় বসে তার আশায়,
মেঘদূত থেকে তার চিঠি পাঠালো বাতাস!
এসো অশ্বারোহীরা আজ মাটি ফুড়ে এসো,
মাতাল বাতাস নিয়ে মেঘ ভেঙ্গে এসো!
তার সাথে বৃষ্টির হোক বেচা কেনা,
মাতাল বাতাস তাকে যদি পাও কাছে,  
বলতে ভুলো না, বৈষ্ণব কবিদের মন,
এখনো তো ভালো হলোনা!
পদাবলী গুলো প্রদীপ জ্বালিয়ে কাঁদে,
মন যে আটকানো তারই প্রেমের ফাঁদে,  
বহুদিন হলো মেয়েটা এই শহরে আসেনা!


ভেসে যাচ্ছে জল পার হয়ে অলিগলি,
সাথে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের বিগলিত মন গুলি,
জল পুড়ে বিজলীর আভায়, চোখে লাগে ছটা!
তোমার আমার মতো নিয়ে অন্তঃস্থলে দহিত জীবন,
নগর দাঁড়িয়ে ভিজছে চুপচাপ রাস্তায় একা,  
তারও বুঝি ডানপিটে শিশুদের মতো শখ হয়!
তার ও কি মন আছে তোমার মতোন?
নাকি ইট লোহা লক্কড়ের ফাঁকে,
তোমার জীবনটাকে ধার করে রেখে,
এই মহানগরী কাঁদছে অবিকল তোমারই মতোন!    
ঝলকানো আলোর বন্যায় সেজেছে আসর,
গুম গুম শব্দ নিয়ে ফিরে এসো মনের সওদাগর,
তোমার কাছে চেয়ে নিবো আমার মনের সাথে,
খাপ খেয়ে যাওয়া সেই মেয়েটার মন!


অদম্য বাতাস প্রলয়ের প্লাবনের মতো,
আবার পৃথিবীকে করেছে বেষ্টিত,
ছুটে পালানো মানুষ পংগপালের মতো যাচ্ছে ভেসে,
আকাশের আগুন ছিটকে পড়ছে রাস্তার কালো পিচে!
শহর হঠাত ভেসেছে কালোয় দিনের আলোয়,
এসো সেই কালো ছায়া মুখে মেখে,
বৃষ্টিকে ছুঁয়ে দিব আজ!
এই শূন্য আকাশ ভেসে যাচ্ছে অঝর ধারায়,
শহর কি পেলো ফিরে তার কাঙ্ক্ষিত জীবন?
অভিশপ্ত নগরের অভিশাপ কেটে যাক জলের ধারায়,
এই জল শরীরে মেখে তুমি নেমে এসো রাস্তায়,
চলো দুজনে ভিজে কদম ফুলের রোঁয়ার মতো ঝরে পড়ি,
চলো খন্ডন করি সব অভিশাপ!


চলো বৃষ্টিকে ছুঁয়ে দিব আজ,
বিশ্বকর্মার চুল্লী থেকে গড়ানো তরল স্বর্ণাভ জলরাশি,
ছুঁয়ে দিচ্ছে তোমার চুলের এলোমেলো ফাঁকে!
একাকী বারান্দায় দাঁড়িয়ে হয়তো ভাবছ কাউকে,
এই অসময়ের উলটপালট বাতাস প্রশান্তি আনে,
হয়তো তোমারও অগোছালো মনে!  
কাঁঠালচাঁপা ফুল বেয়ে নামে বৃষ্টির জল,
কিছু জল তোমার জন্য হয়ে যাবে সাদা ফুল,
ছুঁয়ে দিক তারা তোমার কপালে,
চল হাতে রাখি হাত এই সোনারং এর জলে!


দিল্লী, পাটালিপুত্র ঘুরে যে প্রেম দাঁড়িয়ে আছে রাস্তায়,
নিঃস্তব্ধতার আবরণে ঢাকা তবু তো সে স্তব্ধ নয়,
সেতো আজকের বিদ্যুৎ চমকের মতো হঠাত পুড়ায়,
সমস্ত পুড়ায়!
বজ্রাহতের মতো ফার্ণের কালো দাগ নিয়ে বাঁচা,
তীব্র বিষ বয়ে যায় শিরা উপশিরায়,
মহা ঝড় ভেঙ্গে গাছপালা সব বিষ ধুয়ে মুছে নিয়ে যাক,
শুধু একবার ঘোর বর্ষণে হাতে রাখ হাত!
চলো বিজলীর মত ঝলকাই, আগুনে পুড়াই সব অন্যায়!
চলো বিশুদ্ধ প্রেমের বাগান বানাই এই বৃষ্টিতে,
পবিত্রতম নগরী অধিষ্ঠিত হবে হৃদয়ে আবার!  
  
কয়েকটা শিশু লাফাচ্ছে অবিরত,
উচ্ছল বন্য মাছের মতো!
চলো ওদের মতোই করি বিচিত্র উল্লাস,
নেমে এসো রাস্তায়, হাতে রাখি তোমার উষ্ণ হাত!
একটি মানুষ অদ্ভুত দাঁড়িয়ে নিশ্চল ভিজছে একা,
এইতো জীবন, নিছক শখের বশে ক্রমাগত ভিজে যাওয়া,
নাকি কারো প্রতীক্ষায় তার দিন পার হয়,
ডুবে যাওয়া রাস্তাও হয়তো সে শুনে অশান্ত গর্জন!
চিরচেনা গন্ধের মতো আমিও তো ভালোবাসি তোমাকেই,
একদিন এভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকবো বৃষ্টিতে দুজনেই!
এই অভিশপ্ত নগরীর বাতাস পরিশুদ্ধ হবে সেইদিন,
চলে এসো রাস্তায় আজ বৃষ্টিকে ছুঁয়ে দিব!
আকাশ ঝলসে দিব বিস্ফোরিত ভালোবাসায়!