একদিন স্বেচ্ছায় চলে যাবে যাযাবর,
দলিলের শৃংখলাবদ্ধ স্ট্যাম্পে সযত্নে স্বাক্ষর দিয়ে,
প্রত্যাহার করে নেবে সভ্যতায় জন্মগত অধিকার!
প্রাচীরের ওই পারে জ্যন্ত বৃক্ষ আছে,
স্বর্ণাভ অংগুরীয় রাইফেলের পাহারায় থাকে বলে,
কিনেছিল নীহারিকা মকরসংক্রান্তির রাতে,
আয়েশের ঘুম বেচে,
অরুন্ধতীর আলো পান করে নেশাতুর, দিকভ্রষ্ট!
তবুও বালিকার সুতীব্র অভিমান,ফাটায় গলা,
দেয়ালের ইশতেহারে, এখনো তীক্ষ্ণ কংকনের ঘাত!
সব স্মৃতি পড়ে আছে বাসি ধুলা মেখে, চলে যাবে,
যাযাবর চলে যাবে! পিছনে থাকবে পড়ে,
রড লাইটের আলো, অবিরাম বুড়ো ফ্যানের ঘূর্ণন,
ঘামে ভেজা বিছানার মায়া, নাগরিক অধিকার!


ভবঘুরের মতো অনভ্যাসের বীজ ছড়িয়ে বালিতে,
মাহুতের কুটির ছেড়ে আরো দূর অন্ধকারে,
কুয়াশার দেশ! জীয়ল কূপে গড়াগড়ি খায়,
মৃত পশুদের হাড়গোড়! সেইখানে জমা,
নিয়তির ক্ষেতে হাড় ভেংগে চাষকৃত ব্যর্থ অংগীকার,
শখ তার পুরানো ভুট্টার মতো ফ্যাকাশে গন্ধ পাবার!
স্তব্ধ টলস্টয়ের শুভ্র উঠোনে কয়েক লহমা থেমে,
অর্থডক্স মোমবাতি হাতে দৌড়াবে দান্তের বাগানে!
ব্যক্তিগত শোক, দুমড়ানো প্রেম পত্রের মতো,  
তার নিজস্ব বেয়াত্রিচের সাথে পুড়ছে অনন্তকাল,
নারকীয় আগুনে! দেখে দাত খিচাবে লুসিফার!


লাল পতাকার জোয়ার ও বিপদসীমার ওইপারে,
হেঁটে যাবে যাযাবর নির্দ্বিধায়,  
ওইখানে স্বর্গ নেই, আছে শুধু রক্তলোভী হাঙ্গর,
খুনি চোয়াল! আর মুক্তি আছে চক্রাকার যন্ত্রণার,
ওইখানে গলে যায় দাসত্বের পাললিক পাথর!  
একদিন ঠিক চলে যাবে,
দলিলে ঘোষণা দিয়ে- ‘প্রয়োজন নেই কিছু তার!
প্রতিধ্বনি আজন্ম যন্ত্রণা দিবে আমাদের অনভ্যস্ত-
কানে-'হায় না পারি থাকতে, না পারি সেখানে যেতে!'
বিষম বন্দীদশা জেনে, প্রাতরাশে নিয়মিত নিব,
হেমলক টেনে!


এলার্মের ঘণ্টার মতো অভ্যস্ত বিকালে,
যাযাবর একদিন ফিরবেনা পরিচিত ঘরে,
অনন্য বৈরাগ্য খেলা করে নিউজ চ্যানেলের স্ক্রলে,
উদবসনা সুললিত রমণীদের উদ্বাহু নাচ!
পরিত্যক্ত স্কচের বোতলের মতো ভেংগে পড়ে থাকে,
আর কতো ডিলুউশনে ভোগাবে প্রণয় তাকে!
গোলাপের কাঁটার মতো সুললিত নারীদের-
বাহুর আলিঙ্গন! সামান্য সময় থাকে কিউপিড!
তারপর কন্টকিত যন্ত্রণা, অবশ সকল স্নায়ু,
সুমিষ্ট মধুর চুম্বনে লুকানো বটুলিনামের টক্সিন,
এভাবেই চলে যায় আয়ু!
পেটে রাক্ষসের চোখ নিয়ে এসেছে ঘুর্ণিবায়ু,
পালায় সবাই! অস্তিত্ব মানে খোঁজা নিরাপদ আশ্রয়,
তবু যাযাবর একা হাঁটে অন্তরের অন্ধ আলোয়,
ভাবে ওইখানে মুক্তি আছে! আছে তৃষ্ণার পানি!