এখনো অনেক জল জমা চোখের কোণায়,
অমৃত মন্থন করে আনে যে দেবতা ও অসুর,
তাদেরও জানা নেই কতোটা গভীর,
আমাদের চোখে জমা এই জল!
এখনো অনেক চোখের জল প্লাবিত করে,
স্তেপভূমি, সবুজ ঘাসদের ছুঁয়ে মেশে বসতিতে,
বন্য প্রবাহ ছোটে চোখ থেকে চোখে,
তীব্র সংক্রামক অসুখের মতোন!
মধ্য এশিয়ার যাযাবর যখন তাকায় বহুদূরে,
ফিনিশিয়ার সাগরে, তখনো কল্লোলিত জল,
করে টলমল!
পল্লবিত শৌখিন গাছের পাহারায় শুয়ে থাকা,
রাস্তার রেলিঙ, ধরে রাখে অশ্রুত জীবন,
অজগরের মতো কতো বাঁক বসে নির্বাক,
খাঁড়া ঢাল বেয়ে সেখানেও নামে আজন্ম পালিত,
কষ্টের সাগর! দৃষ্টি সেতো দুঃখে আলোকিত!
অসমতল তলদেশের মতোন,
আমাদের বুকেও জমে আছে রুক্ষ পাথর,
তীব্র ধার তার প্রতিটি কোণায়!
অগণন কাল ধরে সরাচ্ছি সেসব; রক্তাক্ত হাত,
তবু অনিবার্য পলির মতো জমছেই প্রতিনিয়ত!  
যন্ত্রণার পাহাড় পাহারায় রাখে যে বেদুয়িন,
জোছনার রাতে শেয়ালের চিৎকার শুনে কাঁদে,
তারও আত্মা আটকা পড়েছে বিষণ্ণ ফাঁদে!
সবকিছু একাকার করে নামে রক্তের নোনা ধারা,
নিহত চোখের জল নয়,
উৎক্ষিপ্ত রক্তবিন্দু হৃদপিন্ড ছেড়ে,
জল হয়ে চোখে নামে শ্রাবণের মতোন!
আমাদের চোখ তাই হয়ে যায় লাল,
এলে দুঃখের জল।
চোখের সঞ্চয়ে নিয়ে সেই জল আজো বেঁচে থাকা,
হয়তো এভাবে বেঁচে আছে বহু পুরাতন লুব্ধক,
তার কপালে দেখ স্বেদবিন্দুর মতো কান্নার জল,
কে জানে কোন কর্মফল!
শাস্ত্রীয় বিদ্যা বৃথা, কেঊতো জানেনা এর মাপজোক,
তবু জল নিয়ে বেঁচে থাকে সব মানুষের চোখ।  
প্রচন্ড কান্না পায় তবু বেঁচে থাকে তারা,
হাতে নিয়ে দুঃখ ধরার জাল!
নিহত চোখের জলের আশায়ই তো পার হয়,
জীবনের সময়ের পাল!