সবটুকু রাস্তা হেঁটে শেষ,
আধো পূর্ণিমায় দেখতে বসেছি তাই,
জীবনের অবশেষ!
পাকা তরমুজের নষ্ট গন্ধের পচে যাওয়া ক্ষেতে,
নিমগ্ন নীরবতা শ্রীকান্তের শ্মশানের মতো-
জেঁকে আছে! সাদা কালো রিলে এক বিরহী নায়ক-
দুম করে মরে গেলো ম্যাটিনির শোতে!
কয়েক প্রজন্ম ধরে শোক নিয়ে স্যাঁতস্যাঁতে পাটকাঠি,
ঝিরঝিরে বর্ষাতে ভিজে পান করে নিলো,
বরাদ্দ মদিরার শেষ পাত্রটি!
তীব্র আগুনেও তার আর হবেনা দহন!
এইতো পেয়েছি অমৃত বলে সবুজ কালো নকশার সাপে-
পাল্টালো খোলস; পাশে উঁকি দিয়ে শিকারী শংখচূড়,
পলকহীন, হিমাংকের হাসি হেসে বলে,
মূর্খ! সবাইতো ঠিক মরে যাবে অমরত্বের পাপে!  
লাস্ট সাপারের ভাঙ্গা গ্লাসে আমরাও করেছি পান,
তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধের স্বাদে ব্যক্তিগত প্রাণ!
পুড়ে গিয়েছে সেই কবে পশ্চিমের পূন্যতোয়া নদী,
তারই মতো ছাই হবে মহাবিশ্বের সমস্ত সুন্দরী,
বাঁকা হাসি, কোমরের দোল!
নিস্তেজ, নিঃশেষ! সাদা কাশ ফুল ভাবছে ব্যাকুল,        
এসেছিলো কেন তারা ফিরে যাবে যদি!
তবু ঢিলেঢালা জল এখনো পায়ের কাছে একান্তে,
শব্দ করে টলমল, বিক্ষত শিকারীর মতো-
আরতো পারিনা ছুঁতে! লক্ষ্যভ্রষ্ট জ্যা-মুক্ত তীর!  
বসে চুপচাপ উপভোগ করি তবে,
গ্র্যান্ড ফাইনালে হেরে যাওয়া তীক্ষ্ণ মুহূর্তের,
নাটকীয় জীবনের বাকি অবশেষ!
পূর্বনির্ধারিত এই পরাজয়,
রেফারির বাঁশিতে কি বা আসে যায়!


ধবল বিলের পদ্মকে বড়শির মতো গেঁথে শামুকেরা,
কালো পাঁক শরীরে মেখে কথা বলে জলের কণায়,
তাদের দুঃখে কেঁদেছি অনেক রাত,
তারা কি আমার মতো খোলসের ভিতরে কষ্ট জমায়!  
হয়তো এখনো কাঁদি! কেন কাঁদি?
কেউতো জানেনা! আমিও কি জানি!  
এই অবসরে খুঁজি উত্তর;
কয়েক মাইল দীর্ঘ বায়োডাটার পাতাটা;
হেঁটেছি এতোটা দূর! রেল লাইনের পার বিস্ময়ে ভরপুর!
সূর্য্য গ্রহণের দিনে রাহু পড়ে গিয়েছিল পাশের বাগানে,
তাকে ছুঁতে গিয়ে আত্মার এই নির্বাসন কৃষ্ণমৃগের বনে,
মাঝেমাঝে হাঁসফাঁস লাগে, কুয়াশায় খুঁজি জল!
অলৌকিকে হেসে বলে-‘যা ব্যাটা! দিলাম অতল!’    
এখনো তো আছি পড়ে, অনেক গভীর খাদ!
বিড়াল তপস্বীর মতো ভান করে রাখা ধ্যান,
আর কতোকাল, হাসে শয়তান!
সীমান্ত পেরোলেই পাতা আছে পেরেকের ফাঁদ,
তবুও নিশ্চুপে হাই ডোজ সিডেটিভে ঘুমের মতোন,
দেখতে বসেছি এই অবশিষ্ট জীবন!