এক থালা আলো কিনে দিব বলে তোমায়,
এখনো ভাংগা লন্ঠন হাতে হাঁটছি মড়কের রাস্তায়!
নিঃসংগ গিরিবাজ বসে আছে অন্ধকার কার্ণিশে,
শোক সংবাদের কালো বুলেটিন ঠোঁটে নিয়ে,
বোটানিকালের কাকগুলো মাঝরাতে ব্যস্ত মজলিসে,
শিরীষের কাগজে জোরে জোরে ঠোট ঘষে,
নিজেরাই হাসে! হলুদ আলোর মতো সংক্রামক ভয়,
কি মানুষেরও হয়? শহরের বুকে কেমন অদ্ভুত ক্ষত!
অপেক্ষার পালা শেষ হবে খুব দ্রুত,
নির্ঘুম রাত জেগে থাকে বিলুপ্ত বায়সের অবশেষ,
মেসোপোটেমিয় জ্যোতিষীর ছায়া যদিও অজ্ঞাত,
তবুও ভোরে ভেংগে গেলে আয়েসের কাঁচা ঘুম,
আধাবাস্তব স্বপ্ন বিগলিত! আমাকে এখনো ভাবোতো?
আলো খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে উঁকি দেই করিডোরে,
টের পাও? তন্দ্রালীনা টের পাও?
তীব্র ঘোরের বশে চেতনায় নাচানাচি করে,
এক প্রলুব্ধ উন্মাদ! শহরও জ্বরের ঘোরে বকছে প্রলাপ!
এখনো আলোর খোঁজে হাটি অলিতে গলিতে,
তোমার জন্য লন্ঠন ভরা আলো কিনে এনে দিব,
থালা ভরা আলো! বুড়িগংগা থেকে বুড়ি তিস্তার বুকে,
জমে আছে যতো আলো, সব ছেঁকে এনে দিব বলে,
জ্বরের ঘোরে দিয়েছি অসংখ্যবার ডুব,
রূপালী বুকের ভিতরে! জানো তোমার মতোই-
তারা জীবন্ত উচ্ছল! নিজস্ব লয়ে একা একা ঘোরে!
তীব্র বিকিরণে উড়ে যাবে মারীর ভয়! সলজ্জ লাজ-
মাখা বাকা হাসি, ঠোঁটের কোণা থেকে বুকের ভিতরে,
উড়ে এসে গেঁথে যাবে, স্পার্টান বর্শার মতো নির্ভুল!
মাশরুম কুড়ানোর মতো বেছে বেছে তুলছি আলো,
পুরানো ঝুড়িটার ভিতর! চন্দ্রাহত ছায়ার ঠিক পাশে!
সেই আলো! বহু পুরাতন আলো!
তুমি আর পেয়ো নাতো ভয়,
জমানো ভালোবাসা এখনো অনিঃশেষ, অক্ষয়,
মড়কের ভয়, তবু প্রেম এখনো আগুন,
নাছোড়বান্দা পংগপালের মতো মানুষের মন,
মৃত্যু মেনে বারবার জয়ী হবে এই প্রাচীন ব্যাধিতে!
শুধু তুমি আর পেয়ো নাতো ভয়,
কুড়াচ্ছি আলো! অলৌকিক আলো! জলে স্থলে,
এই মরণ মিছিল কালে, শোকগাথা মাখা বুলেটিনে!
মনে রেখো ঘুম ঘোরে,
প্রেম জয়ী হয়! নিশ্চিত মরণেও প্রেম জয়ী হয়!