শহর অন্ধকার! মরা কোটালের শামুকেরা খোঁচা দেয়,
পায়ের পাতায়, যদিও নিভেছে আলো সন্ধ্যার প্রথম প্রহরে,
তবু বিড়ালের মতো যায় নাকি হাঁটা আবছা আলোয়!
শুধু শুধু হেঁটে যাওয়া কয়েকটা দুর্লভ মানুষ,
রেসকোর্সে পড়ে থাকা ঝরা পাতা ফেরী করে ঘোর অমাবস্যায়!
কিনবে কি কেউ! খুব সস্তায়! বেঁচে আছে শুধুই ছায়ারা,
রাতের ঘাসের বনে পকেটে তাদের নেই কোন কানাকড়ি।
প্রেমিকার ছায়া প্রেমিককে বলে, ভীরু আজো ছেড়ে যাবে!
শুকনো বটের পাতায় এখনো লেখোনি চিঠি; ধুত্তোরি!
নিরর্থকতায় হাঁটা বাউল বাতাস করে ফিসফাস,
চোখ কান খুলে রেখো আজ হচ্ছে শিকার!


মোঘল প্রাচীরে জমানো কাদায় আটকায় শিকারীর হাত ও পা,
বিগত শতকের কান্না মিশে আছে মীর জুমলার দরোজায়।
শত শত মাথা, ভাঙা ঘাড় ফাঁসির দড়িতে তারা হয়েছে শিকার,
এখনো শব্দ মাথা ভেঙ্গে বের হয়; স্তব্ধ বিধ্বস্ত লালবাগ,
তার লৌহ কামান জোকারের মতো কি দেয় পাহারা?
হরিণী তোমরা জানো কি তা! চোখে কেন কান্নার জল,
আকাশকে ধুয়ে মুছে করেছো ধবল; গলিত লাভায় বরফের খনি!
তার কলকল শব্দ শুনি; শহরে থাকেনা কোন রাতজাগা পাখি।  
নিষাদরা নামবে আজো বাজলে বারোটা!
রৌপ্যের তীর পড়ে থাকে কেটে, চাঁদের আলোয় যাদুঘর গেটে!
এসেছে শিকারী, খোঁজ শিকার এবার।


পাথরেরা কিভাবে এলো, কে গলালো রাস্তার পিচ!
নিকষ আঁধার তবু মনে হয় ছড়াচ্ছে উত্তাপ কয়েকটা অগ্ন্যুৎপাত,
শব্দেরা গাড় হয়, কেউ আমাদের চেনা ধ্বনি নয়,
পালাচ্ছে ছায়ারা! সরে যাও! সরে যাও!
উচ্ছিষ্টভোজী গৃহপালিত কুকুরের দল মৃত সেজে ধরে আছে ভান,
এখন নয় তাদের সময়! এখন শিকারে নামে ছায়াদের দল,
দৌড়াচ্ছে তীর হাতে গলিপথে, চুপসানো বস্তির ভাঁজে ভাঁজে!
হরিনী মেষেরা বিলুপ্ত; বুড়িগঙ্গার তীরে কার খোঁজে যেন ঘুরে ফিরে,
কিছু অন্য মানব!


প্রতি রাতে তাদের আক্রমণে জ্বলে যায় সোহাগী ঘড়ির রেডিয়াম,
শব্দ ধুপধাপ! সংসারী মানুষেরা ভাবে স্রেফ স্বপ্নের অপচয়!
তাদের অগোচরে একদিন দেখো জ্বলে যাবে সবগুলো ইমারত,
প্রায়শই জন্ম নেয় কতো ভিসুভিয়াসের লাভার মতো স্রোত!
মমি হয়ে যাবে সব হরিণীর চোখ,
অজান্তে নোনা জল ঢুকে রাতের গভীরে; রাস্তায় ভিজে যায় লোক!
শিকারীর দুরন্ত ঘোড়া নিজেই নিজের পিঠে চালায় চাবুক!
ভয় নেই আঁকড়ে রেখো ভালোবাসার শিকড়,
দেখা হবে ছায়ার দুনিয়ায়!