বহমান স্রোতে ভিজাইনি পা, নাচছে একাই বুড়ি তিস্তা,
পাহাড়ি সবুজ চোখে এলোমেলো বালু,
ইলশেগুঁড়ির মতো ছড়ানো ধূসর!
যমুনেশ্বরী জাগ্রত হয়ে পায়নি কি প্রেমিকের দেখা?
তোমার ঘরের পাশে ছুঁয়ে যাওয়া প্রেমে,
আছে তার পাগলামি! মাতাল স্রোত কখনো কি থামে!
আমিও তোমার মতো রাতকে দেখিনি স্রোতে,
স্রোতকে দেখিনি রাতে,
মেয়ে আমি দেখিনি নদীকে শুধু তোমাকে দেখেছি!
তুমি নাকি নদী হয়ে পালিয়েছ! জলেতে ডুবেছ?
নাচছে একাই বুড়ি তিস্তা!
শীর্ণকায় কটি! বুকের পাঁজরে গুম করে দিয়েছে-
রঙ্গিন পায়রা গুলো!
বোবা তাই চত্বরের সিমেন্টের পাখিরা! ওদের গলাতে,
এসো! কাকলির মতো স্রোতে ডেকে ডেকে এসো,  
মেয়ে তুমিতো নদী! তাই কাঁদো এতো!
একজন প্রাচীন বৃদ্ধ বারান্দার পাশে ধরেছে ভাওয়াইয়া,
শিরদাঁড়া বেড়ে ঊঠছে সাপের মতো শীতল কিছু,
নদী তাকে কি বলে ডাকো তুমি?
পেয়ালার জল, হিমবাহ ভেঙ্গে আসা বিক্ষোভ,
নাকি প্রেমাংশু ছড়ানো অজ্ঞাতবাসী নিয়েছে পিছু!  

নাচছে একাই স্রোত! ডুব দিলো লাল চাঁদ চন্দ্রবিলে,
তোমার ছাদের গলি ভেসে গেলো জলে!
প্রতিটি পূর্ণিমায় মেয়ে তুমি নদী হয়ে গেলে,
হৃদয়ের ঐন্দ্রজাল জ্বলে গনগনে প্রভায়!
কে তাকে থামাতে পারে বলো?
কনিষ্কের গুপ্তধনের মতো হেসে বিরহী বেতাল,
ভাসছে তিস্তার স্রোতে! এখনো প্রেম টইটুম্বুর তার-
প্রাকৃত প্রহরে!
আমিতো দেখিনি নদী; সাঁতারে নামিনি স্রোতে,
শুধু তোমাকে দেখেছি মেয়ে,
ঝড়ের রাতে হুট করে নদী হয়ে গেলে ভুলে,
এখনো অনবরতই কাঁদো পড়ন্ত দুপুরে,
ভেজা তুলোর মতো স্যাঁতস্যাঁতে উত্তরের সকালে!
আমি নদীকে দেখিনি আজো, দেখেছি তোমাকে!
নার্সিসাস একা ঝুঁকে আছে তোমার ছায়াতে,
অমাবস্যার মতো অদৃশ্য অশ্রু,
গড়াচ্ছে খুব ধীরে ধীরে! ওই জলে তুমি আছ!
প্রতিচ্ছায়ায় শুধু তুমি বাঁচো
মেয়ে তুমি হুট করে কবে নদী হয়ে গেলে,
বুঝিনি তো আগে!