ভালো আছ মানুষেরা?
লাল পাথরের মিউজিয়ামে পালিশ করে ঘষে রাখা,
ট্যাইরানোসোরাসের ফসিলিকৃত নিবিষ্ট কংকাল,
লজ্জা শরম ঝেড়ে ফেলে হো হো করে হেসে,
জিজ্ঞাসা করছে এই নষ্ট সকালে-
অভিযোজনের অত্যুৎকৃষ্ট নমুনা,
বিবর্তনের খাঁড়া টাওয়ারে দৌড় প্রতিযোগিতায় সেরা,
বাবেল নগরীর প্রথম মালিক,
ভালো আছে তো অহংকারী মানুষেরা!


ভালো আছ মানুষেরা?
ভালো আছে তোমাদের গণতন্ত্র!
যেখানে একান্ন অধিকার পায় উনপঞ্চাশকে থামাবার,
নিজেদের প্রয়োজনে সকাল বিকাল গরিষ্ঠ আয়োজনে,
কতো নিয়মের সংযোজন বিয়োজন!
ভালো আছ মানুষেরা সেইসব নিয়ে সভ্যতা ভবনে?
ঝুলিয়েছিলে সমাজতন্ত্রের লাল কাস্তের ঝান্ডা দেয়ালে,
সমান ফসলের ভাগ দিতে গিয়ে সবাইকে ঠিকঠাক,
তীব্রতম লোভে কয়েকজন মিলে খেয়ে নিল সব!
বিদুরের ছিটানো চালের ভাগ পেলোনা মূষিক,
অভুক্ত ইচ্ছার পেট কখনো ভরলোনা!
স্বয়ম্ভু সত্তার মতো কতোবার জন্ম নিল স্বৈর দানব!
ভালো আছ মানুষেরা সেইসব ব্যর্থ স্বপ্ন নিয়ে?
ইউটোপিয়া! ইউটোপিয়া! বলে আসমুদ্র হাহাকার,
পূরণ অসম্ভব জেনেও ভালো আছ তো?


ভালো আছ মানুষেরা?
ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, হঠাৎ পালালে সব ছেড়ে ঘরে,
পড়ে আছে পরিত্যক্ত রাস্তায় যত্নের গাড়ি,
অসমাপ্ত দালান, আধমরা প্রহরীরা দিচ্ছেনা পাহারা!
আকাশের ধুলো আর ময়লা করেনা স্বর্গের ঊঠান,
শান্তিতে আছেন কি ঈশ্বর?
তীব্র অশান্তির কোলাহলে তার ভাঙ্গছে না গাড় ভোর,
আপসু ঘুমায় মহাজাগতিক শান্তিতে,
এইত চেয়েছিল সে! তাইগ্রীসের পানি মেখে চোখে,
ঘুমাবে অনেক! শান্ত হবে তিয়ামাতের,
উচ্ছৃঙ্খল সন্তানাদির অনর্থক বিশৃঙ্খলা!
মানুষ কি পারছে যেতে আগের মতো গভীর নিদ্রাতে?
কোথায় পালালো মানুষেরা?
উজ্জ্বল সুর্যালোকে অবুঝ শিশুর মতো ভয় পেয়ে,
সাতশো কোটি লোক বসে আছে ঘরের ভিতরে!  


প্যারিসের আন্ডারগ্রাউন্ড দখল করা সর্পিল টানেলে,
প্লেগে নিহত স্তূপীকৃত কংকালের পাহাড়ে,
কয়েকটা পোকা খাওয়া খুলি,
চোখের কোটরে নিয়ে এখনো তাজা ইঁদুর বলে-
ওরে বিংশ শতকের মানুষ! রেনেসাঁর সন্তানেরা,
ভালো আছ তো?
সেকি চোখে কেন ভয়!
যা আমাদেরো করেছিল শেষ! জেগেছে কি আবার?
মরে যাচ্ছ মানুষেরা পোকার মতো দলে দলে,
প্রিয় হারানোর শোক লেখা শুকনো চোখের জলে,
এক বীভৎস ভয়!
মৃত্যকালে পিতাকে রেখে এখনো পালাতে হয়,
ভয়ে দেশান্তরী হতে হয় ফেলে পরিচিত ঘর!
তাড়া করছে আজো তোমাদের স্বর্গের অভিশাপ,
অ্যান্টিক্রাইস্ট! অদৃশ্য মহামারী!
মরেও ভালো নেই অসমাপ্ত জীবনের এই আমরা,
বেঁচেও তো ভালো নেই অভিশপ্ত দুর্বিনীত তোমরা!